শনিবার শালবনির জনসভা থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, সেখানে জিন্দলদের পড়ে থাকা জমিতে শিল্প গড়বে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানান, শালবনিতে শিল্পের জন্য বাম আমলে জিন্দল গোষ্ঠী যে পরিমাণ জমি পেয়েছিল, সেটার একাংশ অব্যবহৃত হিসেবে পড়ে আছে। ওই অব্যবহৃত অংশে বড় শিল্প গড়ে তুলবে রাজ্য সরকার। তবে কোনও ভারী শিল্প নাকি অন্য ক্ষুদ্র, ছোটো ও মাঝারি শিল্পের হাব গড়ে তোলা হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি। এদিন শালবনিতে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’ থেকে মমতা দাবি করেন, বাম আমলে জঙ্গলমহলের মানুষের অনাহারে দিন কাটত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পুরো পালটে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের একাধিক সামাজিক প্রকল্পের কারণে জঙ্গলমহলের সার্বিক উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেন মমতা। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, শিল্প গড়া হবে জিন্দল গোষ্ঠীর অব্যবহৃত জমিতে।
পাশাপাশি মমতা জানান, “এই শালবনিতে একদিন কিছু ছিল না। জ্যোতিবাবুরা জমি দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর কিছু হয়েছিল? হয়নি। এই জিন্দলদের কারখানা আমি এসে উদ্বোধন করেছিলাম। আপনাদের একটা ভালো খবর দিই আবার। জিন্দলদের কারখানার জন্য যতটা জমি লেগেছে, সেটা বাদ দিয়ে বাকি যে জমি পড়ে আছে, যেটা কোনও কাজে লাগেনি, সেই জমিটা ওরা আমাদের ফেরত দিচ্ছে। এখানে আমরা একটি বড় ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করছি। শালবনিতে আবার একটি বড় ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করছি।” প্রসঙ্গত, ইস্পাত শিল্প এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির জন্য বাম আমলের শেষলগ্নে জিন্দল গোষ্ঠীকে শালবনিতে প্রায় ৪,৩০০ একর জমি দেওয়া হয়েছিল। সেই বছরেই ২রা নভেম্বর কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তরের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় ল্যান্ডমাইন হামলা চলেছিল। বরাতজোরে রক্ষা পেয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর দুটি শিল্পপ্রকল্প বাতিল করে গিয়েছিল জিন্দল গোষ্ঠী। যা নিয়ে মমতার রোষের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁদের। ২০১৪ সালে মমতা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, শিল্পের কারণে যে জমি নেওয়া হয়েছে, তা অকারণে ফেলে রাখা যাবে না। এরপর মাত্র ১৩৫ একর জমিতে জিন্দল গোষ্ঠীর সিমেন্ট কারখানা তৈরি হয়েছিল। পরবর্তী কালে আরও কয়েকটি ছোট-ছোট শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। ১,৫০০ একরের মতো জমি নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে জিন্দল গোষ্ঠী, সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে এমনটাই।