স্বস্তির খবর শোনাল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, বিএড উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও নিয়মের জটিলতায় প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ পারছিলেন না অনেকে। যে প্রার্থীরা বিএড উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও আবেদনের সময় যোগ্যতামান হিসেবে ‘ডিএলএড প্রশিক্ষণরত’ বেছে নিয়েছিলেন, পরবর্তীতে সেই ডিএলএড প্রশিক্ষণরতরা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে জানানো হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলার সোমবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, ওই বিএড উত্তীর্ণ প্রার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সেজন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে পোর্টাল খুলে রাখতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে নিজেদের যোগ্যতামান পালটে বিএড করে দিতে পারবেন তাঁরা। গত ২৯শে সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল পর্ষদ, তাতে জানানো হয়েছিল যে ডিএলএড প্রশিক্ষণরতরাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশ খারিজ হয়ে দিয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৫০ জন প্রার্থী। তাঁরা দাবি করেন, বিএড উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের যোগ্যতামান হিসেবে ডিএলএড প্রশিক্ষণরত হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তাই নিয়মের গেরোয় আটকে গিয়েছিলেন তাঁরা।
এবিষয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, যাঁরা ডিএলএড কোর্স সম্পূর্ণ করেন, তাঁরা শুধুমাত্র প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করতে পারেন। তবে অনেক প্রার্থী নিজেদের বিএড কোর্সের পর ডিএলএডের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। এবার প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হতে তাঁরা ডিএলএড প্রশিক্ষণরত বলে উল্লেখ করেছিলেন। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরে তাঁরা সমস্যায় পড়েন। পর্ষদ যদি জানিয়ে দিত যে প্রশিক্ষণরতরা আবেদন করতে পারবেন না, তাহলে ওই প্রার্থীরা নিজেদের বিএড উত্তীর্ণ বলে উল্লেখ করতে পারতেন। তাহলে তাঁরা সমস্যায় পড়তেন না। সেই পরিস্থিতিতে সোমবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, যেহেতু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছিল যে বিএড উত্তীর্ণরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। মামলাকারীরা বিএড উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাই তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে পর্ষদকে। সেজন্য পর্ষদকে ১৫ দিনের জন্য নিজেদের ওয়েবসাইট খোলা রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সময়ের মধ্যে নিজেদের যোগ্যতামান পরিবর্তন করতে পারবেন প্রার্থীরা। অতএব, দুশ্চিন্তার আর কোনও কারণ রইল না।