বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে বিশেষ জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে ‘পথশ্রী’ ও ‘রাস্তাশ্রী’ প্রকল্প দুটির সাহায্যে ৩০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ হাজার কিমি রাস্তা নির্মাণ, সারাই ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ আরম্ভ হয়েছে। এখন নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাস্তা তৈরির কাজ আরও হাজার কিমি নতুন করে বাড়তে চলেছে আরআইডিএফ-এর মাধ্যমে। তবে এই রাস্তা তৈরির দায়িত্ব পঞ্চায়েত দফতরের হাতে থাকছে না। ওই হাজার কিমি রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব পেতে চলেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুর্যাল ডেভেলপমেন্টের একটি তহবিল রয়েছে। সেই তহবিলের নাম হল রুর্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড বা আরআইডিএফ। এই তহবিল থেকেই বাংলার সরকারকে ৮০০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। সেই টাকায় রাজ্যের পূর্ত দফতর গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন রাস্তা ও ব্রিজ তৈরির কাজ করবে। চলতি অর্থবর্ষের মধ্যেই সেই কাজ সেরে ফেলতও হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মোট ৬২টি প্রকল্প বা স্কিমের তালিকা তৈরি করেছে রাজ্যের পূর্তদফতর। রাস্তার কাজের পাশাপাশি তালিকায় রয়েছে কিছু সেতুর পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও। এসব কাজের জন্য ৮০০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। আরআইডিএফ-এর অর্থে এই কাজ করা হবে বলে এই তালিকা নাবার্ড কর্তৃপক্ষের কাছেও জমা দেওয়া হচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। সাধারণত নাবার্ড রাজ্যের প্রস্তাবে সায় দেওয়ার পর অর্থ বরাদ্দ করে। ফলে অনুমোদন আসা মাত্রই যাতে কাজ শুরু করা যায়, সেই মতো পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে পূর্ত দফতরকে। সাম্প্রতিক কয়েক বছরের মধ্যে চলতি অর্থবর্ষেই আরআইডিএফ খাতে সর্বাধিক টাকার কাজ করতে চলেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এই টাকার পরিমাণ ছিল ৬০০ কোটি। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই খাতে বরাদ্দ হয়েছিল ৪০০ কোটি টাকা। রাজ্যের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি জেলাতেই রাস্তা সংস্কারের কাজ হবে। এক কিলোমিটার রাস্তার জন্য খরচ হয় ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা। কিছু সেতু সংস্কারের জন্য খরচ বাদ দিলে ৮০০ কোটি টাকার বেশিরভাগটাই সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে ব্যয় করবে রাজ্য সরকার।