একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত হয়েছে বঙ্গ বিজেপি। একের পর এক দল ছেড়েছেন নেতা-নেত্রীরা। ক্রমশ দুর্বল হয়েছে সংগঠন। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এল আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। বঙ্গ গেরুয়াশিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বাংলা নিয়ে উৎসাহ হারাচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। যার ফলে কমে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের যাওয়া-আসা। যা অস্বস্তিতে ফেলছে বঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বকে। অথচ গত বছর মহাসমারোহে একঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতাকে বাংলার পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা। তাতে সুনীল বনসলের মতো বিজেপির প্রথম সারির সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে ঝাড়খণ্ডের নেত্রী আশা লাকড়া, বিহারের নেতা মঙ্গল পাণ্ডেদের নাম ছিল। আগে থেকে অমিত মালব্য, সতীশ ধনদের মতো নেতারা তো ছিলেনই। প্রথম দিকে বনসল থেকে শুরু করে পাণ্ডে বা লাকড়ারা নিয়মিত বঙ্গ সফরে এসে সাংগঠনিক বৈঠক করা, দলের অন্দরের সমস্যা মেটানো, দলের পুরনো অথচ বসে যাওয়া নেতাদের ফেরত নিয়ে আসার মতো বিষয়ে জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বরের পর থেকেই যাতায়াত কমে গিয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের।
এবিষয়ে দলের একাংশের অভিযোগ, কোনও সমস্যা নিয়ে ফোন করলে রাজ্যস্তরেই কথা বলে দেখে নেওয়ার পরামর্শ মিলছে। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের অনীহা দেখে বসে যাওয়া নেতারা, যারা দলে ফেরার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিলেন, তাঁরাও ফের নিজেদের গুটিয়ে নিতে শুরু করেছেন। রাজ্য বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী অবশ্য পর্যবেক্ষকদের বঙ্গ সফর কমে যাওয়ার অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, দৈনন্দিন স্তরে কাজকর্ম দেখা পর্যবেক্ষকদের কাজ নয়। রাজ্যে দল চালাতে হবে বঙ্গ বিজেপিকেই। পর্যবেক্ষকরা বিশেষ প্রয়োজনে আসবেন, পরামর্শ দেবেন। বাংলায় আসা কমে যাওয়ার কথা মানতে চাননি বনসল নিজেও। তিনি জানান, কিছুদিন আগেই শাহর হঙ্গে বঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি, যখনই প্রয়োজন তখনই বাংলায় যাবেন বলেও মন্তব্য করেছেন। যদিও বঙ্গ বিজেপির জনৈক সাংসদ কটাক্ষ করেছেন যে, শাহ-নাড্ডার মতো নেতারা বাংলায় এলে হাজিরা দিতে সমস্ত পর্যবেক্ষকই উপস্থিত হন। তারপর আর দেখাও মেলে না তাঁদের।