সম্প্রতি কলেজিয়াম পদ্ধতিতে বিচারপতি নিয়োগ ঘিরে তুঙ্গে পৌঁছেছে শীর্ষ আদালত ও কেন্দ্রের মধ্যে টানাপোড়েন। এবার উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর এবং কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে রাজি হল বম্বে হাই কোর্ট। আগামী বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৯ই ফেব্রুয়ারি বিচারবিভাগের বিরুদ্ধে মন্তব্যের অভিযোগে ধনখড় এবং রিজিজুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানি হতে পারে। কলেজিয়াম ব্যবস্থা এবং বিচারালয়ে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার এবং বিচারবিভাগের দ্বৈরথের আবহে গত ডিসেম্বরে দিল্লীতে একটি আলোচনা সভায় ধনকর বলেছিলেন, ‘‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত আইনসভার সদস্যদের পাশ করা আইনকে দেশের শীর্ষ আদালত ‘অসাংবিধানিক’ বলছে, এমন নজির বিশ্বে আর নেই!’’ স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে উঠেছিল প্রবল বিতর্কের ঝড়।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্ট ও বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টগুলির বিচারপতিদের নিয়োগে দীর্ঘ দুই দশকের কলেজিয়াম ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছিল। বিকল্প হিসাবে জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। এই উদ্দেশ্যে সংসদ এবং ১৬টি রাজ্যের বিধানসভায় বিলও পাশ করানো হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এনজেএসি গড়ার ব্যবস্থাকে বাতিল ঘোষণা করে কলেজিয়াম প্রথাই বহাল রাখার রায় দেয়। সেই প্রসঙ্গ টেনেই ওই মন্তব্য করেছিলেন ধনকর। অন্য দিকে, গত কয়েক মাস ধরে রিজিজু ধারাবাহিক ভাবে কলেজিয়াম ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। এমনকী স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রকাশ্যে। পাশাপাশি তাঁর দাবি, কলেজিয়ামের মধ্যে যে নিয়োগ হচ্ছে, তাতে সমাজের সর্ব স্তরের প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। তা ছাড়া কেন্দ্রের পক্ষের যুক্তি, দেশের শীর্ষ আদালত এবং উচ্চ আদালতগুলিতে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারেরই প্রধান ভূমিকা নেওয়া উচিত। অন্য দিকে, বিচার বিভাগের বড় অংশের অভিযোগ, প্রস্তাব পাঠানো হলেও নানা কারণে বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতিকে ক্রমশ দীর্ঘায়িত করছে মোদী সরকার। ফলত আদালতে তৈরি হচ্ছে শূন্যপদ। পাশাপাশি বিচারপ্রক্রিয়াতেও দেখা দিচ্ছে বিলম্ব।