রোগীদের স্বার্থে নতুন উদ্যোগ নিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। এবার সেখানেই ‘ইউরোডায়নামিক স্টাডি’ করাতে পারেন রোগীরা। এপ্রসঙ্গে চিকিৎসকদের বক্তব্য, ডায়াবেটিস ছাড়াও বেশ কয়েকটি রোগ আছে যার ফলে আধ-একঘণ্টা অন্তর প্রস্রাবে যেতে হয়। যেমন পুরুষের প্রস্টেটের সমস্যা। তেমনই পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে মূত্রথলির সংকোচন-প্রসারণের যদি সমস্যা থাকে তবে ঘনঘন প্রস্রাব পেতে পারে। আবার বড় কোনও দুর্ঘটনায় কোমর বা মেরুদণ্ডে আঘাত পেলেও মূত্রথলির সঙ্গে মূত্রনালির মধ্যে সামান্য ভাগ হয়। ফলে স্নায়ুর সমস্যা থেকেও প্রস্রাবের বেগ সামলাতে না পারার মতো অস্বস্তি দেখা দেয়। এই সমস্যা দিনের পর দিন পুষে রাখলে নিরাময় কঠিন হয়ে পড়ে। সেজন্যই মেডিক্যাল কলেজের ইউরোলজি বিভাগে চালু হয়েছে এই পদ্ধতি।
এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত, “হাইপার অ্যাক্টিভ অফ ব্লাডার অথবা হাইপার রিঅ্যাক্টিভ ব্লাডারের জন্য এমন সমস্যা। তাই আগে রোগ চিহ্নিত করতেই নতুন এই পরীক্ষা চালু হয়েছে।” মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, “যন্ত্রে বসার আগে পরিমাণমতো জল খেয়ে রোগী একটি চেয়ারে বসবে। রোগীর প্রস্রাব একটি নির্দিষ্ট গতিতে হচ্ছে? না মাঝপথে আটকে যাচ্ছে তা সামনের মনিটরে গ্রাফের মাধ্যমে ফুটে উঠবে। বোঝা যাবে মূত্রথলির সংকোচন প্রসারণ স্বাভাবিক কি না? যা দেখে চিকিৎসক বুঝতে পারবেন সমস্যাটা ঠিক কোথায়?” পাশাপাশি, ইন্দ্রনীলবাবুর কথায়,‘‘মূত্রথলির সংকোচনের জন্যই প্রস্রাব হয়। কিন্তু প্রস্টেট বা অন্য সমস্যা হলে ব্লাডার বা থলিতে মূত্র ভরতি না হলেও আচমকা সংকোচন হতে থাকে এবং রোগী প্রস্রাবের বেগ সামলাতে পারে না।’’
উল্লেখ্য, চিহ্নিত হয়ে গেলে যে সমস্যার জন্য এই ঘনঘন প্রস্রাব বা বেগ সামলাতে না পারা, সেই বিভাগে পাঠানো হবে রোগীকে। আপাতত সপ্তাহে দু’দিন এই পরীক্ষা হবে। দরকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। যিনি প্রস্রাবের গতি ও মূত্রথলির সংকোচন এবং মূত্রনালির মধ্যে ফারাকের বিষয়টি নির্ণয় করতে পারবেন। কারণ বারবার রোগীকে এই যন্ত্রে বসানো সম্ভব নয়। তাই অভিজ্ঞ ইউরোলজিস্টই এই কাজ করতে পারবেন।’’ স্বাস্থ্যভবন তথ্যসূত্র অনুযায়ী, বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করতে গেলে অন্তত ৭-১০ হাজার টাকার দরকার। আর মেডিক্যাল কলেজে মাত্র দু’টাকায় রোগ পরীক্ষা আর সুস্থ হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসকরা। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ইতিবাচক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।