তৃণমূল আমলে রাজ্যের প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামের ঘরে ঘরেই পৌঁছে গিয়েছে বিদ্যুৎ এবং জল। তবে ব্যতিক্রম ছিল হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর গ্রাম। স্বাধীনতার পর থেকে এতদিন সেখানে পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। জনসংযোগ সারতে গিয়েই বাসিন্দাদের এই দুর্দশার কথা কানে গিয়েছিল তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। যেমন কথা, তেমন কাজ। অবশেষে নতুন বছরের প্রথম দিনেই সৌতনচক ও বিষ্ণুরামচক পেল বিদ্যুতের আলোর স্বাদ। যা নিয়ে খুশির আমেজ দুই গ্রাম জুড়ে।
গতকাল ট্রান্সফরমারকে সামনে রেখে হল বিশ্বকর্মা পুজো। কারও চোখে আনন্দাশ্রু। আতসবাজি ফাটিয়ে, ঢাক বাজিয়ে চলল লাড্ডু বিলি। উঠল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে জয়ধ্বনি। বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্লোগান। আর যাঁর উদ্যোগে এই ‘আঁধার ঘুচিয়ে আলো এল’ সেই কুণাল ঘোষকে সামনে পেয়েই সবাই আপ্লুত। কীভাবে তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাবেন সেটাই ভেবে উঠতে পারছেন না অনেকে।
গত ৪ ডিসেম্বর হলদিয়ায় চায়ের আড্ডা থেকে এই দুই গ্রামে বিদ্যুৎ না আসার খবর জেনেই কুণাল বিদ্যুৎমন্ত্রীকে ফোন করে জানিয়ে ছিলেন, ‘কিছু একটা করা হোক।’ তারপর কাজ শেষ মাত্র সাতাশ দিনেই! রবিবার গ্রাম যখন উৎসবের মেজাজে তখনও বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে কি না খোঁজ নিলেন কুণালবাবুকে ফোন করে। রাত পর্যন্ত গ্রামে থাকা কুণালের সঙ্গে প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডলও তদারকি করলেন, যাতে কোনও সমস্যা না হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ বারবার চেষ্টা করেছে, আইন দেখিয়ে যাতে কাজ আটকানো যায়।
যদিও কাজ চলাকালীন বাধা দিতে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, আলো, জলের মতো জীবনযাপনের আবশ্যিক সুবিধা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না, সেই বিষয়টি সামনে রেখেই কাজ হয়েছে এবং শেষও হয়েছে রেকর্ড সময়ে। এরপরই কুণাল শুভেন্দু অধিকাদীকে বিঁধে বলেন, ‘উনি কথা দিলেও কথা রাখেননি। দিব্যেন্দু অধিকারী সাংসদ। কিন্তু কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়ে মিথ্যাচার করে গিয়েছেন। উলটে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে এবার আমাদের কাজে বাধা দিয়েছেন। মানুষ বুঝে নিয়েছেন কারা প্রকৃত কথা রাখতে সক্ষম। একটা নতুন ইতিহাস রচিত হল। এই ঘটনার সাথী হতে পেরে আমি গর্বিত। এর জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ বিদ্যুৎ দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মীদের।’