বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি বলে আসছেন, বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থার অবসান দরকার। এই ব্যবস্থায় বিচারপতি নিয়োগে সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর সঙ্গে দিন দিন বিচারালয়ের বিরোধ প্রসারিত হচ্ছে। এবার ফের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান কলেজিয়াম প্রথা বদলানোর প্রস্তাব নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিত বলে মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
সংসদে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিচারবিভাগের উচ্চ পর্যায়ে নিয়োগ ঝুলে রয়েছে। কিন্তু সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য নয়। পদ্ধতির জন্য।’ নতুন ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত সমস্যা মিটবে না বলেও দাবি করেছেন রিজিজু। আইনমন্ত্রীর বৃহস্পতিবারের ওই মন্তব্যের জেরে আগামী দিনে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে মোদী সরকারের সঙ্গে বিচারবিভাগের দ্বন্দ্ব বাড়াতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই আইনজীবীদের একাংশ রিজিজুর মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের প্রস্তুতি চলছে বলে আইনজীবীদের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরেই রিজিজু ধারাবাহিক ভাবে বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চলেছেন। যা নিয়ে এর আগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত মোদী সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চ বিচারবিভাগীয় স্তরে বিচারপতি নিয়োগে গয়ংগচ্ছতার অভিযোগও তুলেছে। চলতি মাসের গোড়ায় বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউল ও বিচারপতি এএস ওকা-র বেঞ্চ কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে বলেছিল, বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য কলেজিয়ামের সুপারিশ করা নামে সম্মতি জানাতে সরকারের তরফে অকারণে দেরি করা হচ্ছে।
যদিও রিজিজু তাঁর অবস্থানে এখনও অনড়। এর আগে তিনি প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিলেন, বর্তমান কলেজিয়াম ব্যবস্থায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। এমনকি, বিচারপতি নিয়োগের এই ব্যবস্থাকে ‘ভারতীয় সংবিধানে বহিরাগত’ বলেন তিনি। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে সম্প্রতি ‘হতাশাজনক’ বলেছে শীর্ষ আদালত। মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই ২০১৫ সালে জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) আইন এনেছিল। কিন্তু শীর্ষ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে কলেজিয়াম ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষেই রায় দেয়। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ চলছে কেন্দ্র ও শীর্ষ আদালতের।