ফের উজ্জ্বল বঙ্গ। সর্বভারতীয় মঞ্চে আবারও মিলল বাংলার স্বীকৃতি। কৃষিনির্ভর অর্থনীতির বিজ্ঞানী হওয়ার পরীক্ষায় সেরা হলেন বঙ্গকন্যা আদৃতা দাম। কোচবিহারের একেবারে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আদৃতা। সুনীতি অ্যাকাডেমির উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে কল্যাণী মোহনপুরের বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এবার গন্তব্য দিল্লির পুসা রোডে কৃষিতে দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ। র্যাঙ্ক কার্ডের পর দেখা গেল, সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের পরীক্ষায় এগ্রিকালচারাল ইকনমিক্সে একদম শীর্ষে। এবার জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপেও চমকে দিয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ৭২ জন র্যাঙ্ক পেয়েছেন। গতবারের নিরিখে সাফল্য দ্বিগুণ। উপাচার্য বিকাশ সিংহ মহাপাত্র কৃতিত্ব দিলেন পড়ুয়াদের। বললেন, ‘‘আমাদের কাজ আমরা করেছি। ছেলেমেয়েরা ভাল পড়েছে, প্রচেষ্টা করেছে। সাফল্য এলে ভাল লাগেই।’’ জিআরএফ-এর এন্টেমোলজিতে ফার্স্ট হয়েছেন সুমন নাটুয়া। সয়েল সায়েন্সেও প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। একাধিক বিষয়ে রয়েছেন দ্বিতীয়, তৃতীয়।
প্রসঙ্গত, আদৃতার লড়াই ছিল স্কুলের করণিক মাকে সঙ্গে নিয়ে। কোচবিহার শহর লাগোয়া পঞ্চায়েতের শ্যামাপ্রসাদ কলোনিতে বাড়ি। মা মহিষগুড়ি স্কুলের করণিক। মাধ্যমিকে পেয়েছিলেন ৯৩.৪ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে ৯২ শতাংশ। এমএসসি কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখানেও সর্বোচ্চ নম্বর। বাবা ছিলেন একটি স্কুলের শিক্ষক। একাদশে পড়াকালীনই হারিয়েছেন বাবাকে। কিন্তু জেদ ছাড়েননি। শুরু হয় মাকে পাশে নিয়েই জেতার লড়াই। পড়াশোনার চাপে বন্ধ হয়ে যায় ভালবাসার উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত। তবে এখনও রান্না করতে ভালবাসেন। ভালবাসেন অবসরে বন্ধুদের সঙ্গে গল্পে মাততেও। সাধারণের মতোই ফেসবুক করেন। কিন্তু সেটা কখনও নিজের লক্ষ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। দিল্লীর পুসা রোডে আইসিআর-এ গবেষণার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। কৃষকদের অর্থনীতির উন্নয়নেই এবার কাজ করে যেতে চান। আর বাংলার কৃষকদের জন্য আলাদাভাবে নিবিড় কাজ করতে পারলে খুশি হবেন। ২০শে উসেপ্টেম্বর হয়েছিল এসআরএফ-এর পরীক্ষা। ফল বেরোয় ২০শে অক্টোবর। আর র্যাঙ্ক কার্ড হাতে এসেছে তিনদিন আগে। ৪৮০-এর মধ্যে ৩৬৬ নম্বর সংগ্রহ করেছেন আদৃতা।