২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সবাইকে চমকে দিয়ে বাংলার বুকে ১৮টি আসন দখল করেছিল। সেই জয়ের ওপর ভর দিয়েই গেরুয়া শিবির ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা দখলের ডাক দিয়েছিল। যদিও সেই ডাকে সাড়া দেননি বঙ্গবাসী। কিন্তু বিজেপি এখন ঘুরপথে বাংলার আদিবাসী সমাজের ওপর নিজেদের প্রভাব বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে। আর সেই ক্ষেত্রে তাঁরা হাতিয়ার বানাচ্ছে একলব্য স্কুলগুলিকে।
মোদী সরকার দেশের প্রতিটি আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লকগুলিতে ১টি করে মডেল স্কুল গড়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল। বিগত ৭-৮ বছর ধরে সেই কাজ চলছে। বাংলার বুকেও ২০১২১ সালের নির্বাচনে বিজেপি ইস্তাহারে এই স্কুলের কথা বলা হয়েছিল ‘মডেল স্কুল’ হিসাবে। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, ভোটে জিতলে আদিবাসী অধ্যুষিত প্রতিটি ব্লকে শুধুমাত্র এই জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের জন্য মডেল আবাসিক স্কুল গড়ার। সেই প্রয়াস ধাক্কা খাওয়ায় এখন মোদী সরকার চাইছে বাংলার একলব্য স্কুলগুলি রাজ্যের হাত থেকে নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার।
কিন্তু কেন? বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মোদী সরকার চাইছে এই একলব্য স্কুলগুলির মাধ্যমে বাংলার বুকে আদিবাসী শিক্ষায় গেরুয়াকরণের জোয়ার আনতে। সেই কারণেই বাংলার সমস্ত একলব্য আবাসিক স্কুলের রাশ সরাসরি নিজেদের হাতে নিতে চাইছে কেন্দ্র। রাজ্যকে বাদ দিয়ে নিজেরাই ঠিক করতে চাইছে পাঠ্যক্রম। এই দাবি যে খুব একটা ভুল নয়, তার প্রমাণ মিলেছে নবান্ন থেকেও। রাজ্যে এই মুহূর্তে মোট সাতটি একলব্য মডেল আবাসিক স্কুল রয়েছে। ঝাড়গ্রাম, নাগরাকাটা, বুনিয়াদপুর, মুকুটমনিপুর, মানবাজার, বোলপুর এবং কাঁকসার মতো আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় রয়েছে স্কুলগুলি। নতুন একটি স্কুল তৈরি হচ্ছে কালিম্পংয়ে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রামের স্কুলের পরিচালনার দ্বায়িত্ব রামকৃষ্ণ মিশনকে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাতটি স্কুলের প্রায় তিন হাজার ছাত্র-ছাত্রী পড়াশুনো করে রাজ্যের সিলেবাস মেনেই। শিক্ষক নিয়োগও করে রাজ্য। এবার সেই একলব্য স্কুলগুলি নিয়েই রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে মোদী সরকার।