বাংলার সাবেকি ও ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল বীরভূমের সুরুল জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো। প্রতি বছর পুজো দেখতে বাইরে থেকেও বহু মানুষ আসেন সেখানে। উল্লেখ্য, এখানে অপরাজিতা পুজো দিয়ে শুরু হয় দশমীর পুজো। পুজোর শেষে পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘায়ু কামনা করে অপরাজিতা গাছে লতা বেঁধে দেওয়া হয় তাঁদের হাতে। সুরুল জমিদার বাড়িতে দশমীতে সিঁদুর খেলার রেওয়াজ নেই। বরং এদিন বিল্বপত্রে দুর্গা নাম লেখেন বাড়ির লোকেরা। শুধু বাড়ির লোকেরাই নন, আশপাশ থেকে আসা বহু মানুষই এই উদযাপনে মেতে ওঠেন। সুরুল জমিদার বাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন হয় দশমীর রাতে। তবে সকাল থেকে নিয়ম মেনে পালিত হয় বিভিন্ন রীতি-রেওয়াজ।
সুরুল বাড়ির দুর্গোৎসবে অপরাজিতা লতা পুজো করার পর তা সদস্যদের হাতে বেঁধে দেওয়া হলে নির্ঘণ্ট মেনে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়। এদিন ঠাকুরদালানে বসে বেল পাতায় লেখা হয় দুর্গা মন্ত্র। এই মন্ত্র লেখার পর তা জপ করেন সকলে। তাঁদের বিশ্বাস, এই ধ্যানমন্ত্র জপ করে মায়ের কাছে কিছু চাইলে খালি হাতে ফেরান না দুর্গা মা। প্রতিমা নিরঞ্জনের ক্ষেত্রেও একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। যদি বিসর্জনের সময় এক ফোঁটাও বৃষ্টি হয় তা হলে বিসর্জন বন্ধ রাখা হয়। কারণ, এই বাড়ির নিয়ম মাকে অক্ষত অবস্থায় বিসর্জন দিতে হবে। যদি বৃষ্টির জলে প্রতিমার এক ফোঁটাও ক্ষতি হয়, সেক্ষেত্রে অমঙ্গল আসন্ন। তেমনই মনে করেন এ বাসভবনের সদস্যরা।