প্রায় দু’বছর আগে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে দীর্ঘ সময় ধরে সীমান্তে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে ছিল দু’দেশের সেনা। পরবর্তী সময়ে দু’দেশের সেনা ও কূটনৈতিক পর্যায়ে একাধিক বৈঠকের পরে বিভিন্ন স্থানে সেনা পিছিয়ে আনতে রাজি হয় উভয় পক্ষ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই সীমানা হয়ে দাঁড়ায় পেট্রোলিং পয়েন্ট-৫। যার ফলে বাকি অংশে নজরদারির অধিকার হারায় ভারত। সোমবারই পূর্ব লাদাখের গোগরা ও হট স্প্রিং (পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫) এলাকা থেকে সেনা পিছিয়ে আনা শেষ করেছে ভারত ও চীন। কিন্তু বিরোধীরা তো বটেই, বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যন স্বামীও অভিযোগ তুলেছেন, চীনের চাপে নিজের এলাকা ছেড়ে পিছিয়ে এসে নিজের জমিতেই ‘বাফার জোন’ তৈরি করতে বাধ্য হয়েছে ভারত। স্বামীর কথায়, ‘চীন বুঝিয়ে দিয়েছে, যা আমার সে তো আমারই। যা তোমার তা-ও আমার।’
গত সপ্তাহে যে সেনা পিছোনোর প্রশ্নে দু’দেশ রাজি হয়েছে, তাতেও ভারত বেজিংয়ের চাপে নিজের জমি ছেড়েছে বলে অভিযোগে সরব হয়েছেন লাদাখ অটোনোমাস হিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (এলএএইচডিসি)-এর কাউন্সিলর কনচখ স্টানজিং। তাঁর দাবি, ভারতীয় সেনার এই পশ্চাদপসরণের ফলে দেশের সীমানায় থাকা কুগ্র্যাং উপত্যকা আগামী দিনে বিতর্কিত এলাকা হিসেবে গণ্য হবে। স্টানজিংয়ের বক্তব্য, ভারত কেবল পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫ থেকে নয়, করম সিংহ পাহাড়ে থাকা পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৬ থেকেও পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা-সহ ভারতের দিকে থাকা বিস্তীর্ণ এলাকা বাফার জোনে পরিণত হয়েছে।
স্টানজিংয়ের দাবি, ‘সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে ভারতের দিকে থাকা কুগ্র্যাং উপত্যকার বড় অংশ বাফার জোনে পরিণত হবে। স্থানীয় পশুপালকদের চারণভূমি হিসেবে ওই উপত্যকা ব্যবহার হত। কিন্তু স্থানীয় মানুষের আবেগকে কে আর পাত্তা দেয়!’ আবার সুব্রহ্মণ্যন স্বামীর কথায়, ‘চীন আসলে ভারতীয় জমি থেকে সরে গিয়েছে। আর ভারত নিজের জমিতেই (সীমান্ত থেকে) পিছিয়ে এসেছে।’ অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর প্রশ্ন, ‘চীন ইতিমধ্যেই সংঘর্ষের আগের স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে আপত্তি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তো লড়াই না করেই ভারতের প্রায় হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি চীনের হাতে তুলে দিয়েছেন। কীভাবে সেই জমি ফিরে পাওয়া যাবে, তা কি কেন্দ্র ব্যাখ্যা করবে?’