প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার পটশিল্প। এবার এই শিল্পের ঐতিহ্য তুলে ধরতে পটচিত্র দিয়ে মণ্ডপ সাজাতে চলেছে ভবানীপুর ৭৫ পল্লী। এ বছর দুর্গা পুজোয় তাদের থিম, ‘ঐতিহ্য বেঁচে থাকুক’। দুর্গা পুজোয় দর্শক টানতে এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে থিমসজ্জা। শহরের পুজোর থিম দেখতে ভিড় জমান মানুষ। পুজো মণ্ডপগুলি নানান থিমে সেজে উঠছে। সেই থিম সজ্জায় নিজেদের এগিয়ে রাখতে ভবানীপুর ৭৫ পল্লী বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি পটচিত্রকে তাদের মণ্ডপ সজ্জার মাধ্যমে উপস্থাপিত করতে চাইছে এবছর। শিল্পী প্রশান্ত পালের সৃজনশীলতায় এই থিম নির্মাণের কাজ চলছে। হিন্দু মুসলমান, নারী পুরুষ নির্বিশেষে বাংলায় পট শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন শিল্পীরা। যারা পটচিত্র আঁকেন তাঁদের পটুয়া বলা হয়। মূলত বিভিন্ন কাহিনী নিয়ে পটচিত্র আঁকা হয়ে থাকে। তা হতে পারে পৌরাণিক, হতে পারে ঐতিহাসিক বা সমসাময়িক ঘটনাবলী।
পটুয়ারা পটচিত্র লাটাইয়ের মতো খুলতে খুলতে গানের মাধ্যমে তা নিবেদন করেন। বর্তমানে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। একইসঙ্গে পটশিল্প বিলুপ্তির পথে। বাংলার পুরনো সেই ঐতিহ্য রক্ষার বার্তা দিতে এবং পটশিল্পীর পাশে দাঁড়াতে তাই এবারের মণ্ডপ পটচিত্র দিয়ে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে ভবানীপুর ৭৫ পল্লী দুর্গা পুজো কমিটি। এই উদ্যোগ নিয়ে পুজো কমিটির আহ্বায়ক সায়ন দেব চট্টোপাধ্যায় জানান, আমরা বিশ্বাস করি পটশিল্পের এই বিলুপ্ত প্রায় শিল্প-রূপটি এ বছর আমাদের পুজো উপস্থাপনার মাধ্যমে তার হারানো গৌরব ও খ্যাতি ফিরে পাবে। মেদিনীপুর জেলার পিংলা ও নয়াগ্রাম থেকে পটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা পূজা মন্ডপের পাশে স্টলে তাদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন ও বিক্রি করবেন। সেই শিল্পীদের যাতায়াত, খাওয়া এবং থাকার সমস্ত খরচ পুজো কমিটি বহন করবে বলেও জানান তিনি।