রবিবার উত্তর বাংলার চা-শ্রমিকের স্বার্থরক্ষায় তাদের সংঘবদ্ধ করে লড়াই ও গোষ্ঠী উন্নয়নের প্রস্তুতিতে মালবাজারে চা-বাগানের শ্রমিক সম্মেলনে বিপুল সমাবেশ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, চা-বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে এমন সম্মেলন এই প্রথম। এদিনের সভায় অভিষেক ছাড়াও রয়েছেন ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়, মলয় ঘটক, উদয়ন গুহ, সাবিনা ইয়াসমিন, গৌতম দেব সহ তৃণমূলের বহু নেতা-মন্ত্রী। এদিন মঞ্চে উঠেই চা শ্রমিকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন অভিষেককে। একইসঙ্গে নানা ইস্যুতে একহাত নিলেন বিরোধীদেরও। সমাবেশ থেকে অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, চা শ্রমিকদের পাশে আছে তৃণমূল। জানান, শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত চা-শ্রমিকদের দাবি দাওয়া নিয়ে সোচ্চার হবেন। শ্রমিকদের স্বার্থে যতদূর যেতে হয়, যাবেন তাঁরা। অভিষেক এও মনে করিয়ে দেন, সিপিএম আমলে ২০১১ সালে চা শ্রমিকদের হাজিরা ছিল ৬৭ টাকা। কিন্তু, সেটা এখন বেড়ে হয়েছে ২৩২ টাকা। গত জুন মাসে ৩০ টাকা বেড়েছে। ৩ মাসের মধ্যে প্রত্যেক শ্রমিকের হাতে আইডি কার্ড পৌঁছে যাবে।
পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, “উত্তরবঙ্গ কথাটা নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে। কোনও উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, গৌড়বঙ্গ নয়। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, দার্জিলিং থেকে দেগঙ্গা একটাই বঙ্গ। সে বঙ্গের নাম পশ্চিমবঙ্গ। অন্য কোনও বঙ্গল নয়।” বিজেপিকেও একহাত নেন তিনি। “আজকের এই সমাবেশ কোনও রাজনৈতিক সমাবেশ নেউ। পুরসভা নেই, বিধানসভা নেই, লোকসভা নেই। পঞ্চায়েত ভোটও দেরি। আমি বলেছিলাম প্রতি ২ মাসে আসব। শেষ ১২ই জুলাই এসেছিলাম। এবার ২ মাস শেষ হওয়ার আগেই এসেছি। তাই এই সমাবেশ কথা রাখার সমাবেশ। আপনার জন্য কাজ করার জন্য শপথ নেওযার সমাবেশ এটা। ভোটের সময় যাঁরা আসে বহিরাগতরা, পরিযায়ী পাখির মতো, আর ভোটের পর তাঁদের কাউকে দেখতে না পাওয়া গেলে তাঁর উপর আপনারা আশা-ভরসা রাখবেন?”, বলেন অভিষেক। পাশাপাশি, মোদী সরকারকে একহাত নিয়ে অভিষেকের উক্তি, “প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন বন্ধ থাকা বীরপাড়া, লঙ্কাপাড়া, তুলসিপাড়া সহ ৭টি চা বাগান কেন্দ্র সরকার অধিগ্রহণ করবে। নতুন করে খোলার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু, বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী আর বাস্তবায়িত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি যা বলে করে না। তৃণমূল কংগ্রেস যা বলে তা করে।” পাশাপাশি তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ৩১শে জানুয়ারি মধ্যে প্রত্যেক শ্রমিকের হাতে আইডি কার্ড পৌঁছে যাবে। “আমি শ্রমমন্ত্রীকে বলব ৬টা চা বলয়ের ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার চা শ্রমিকের সবার যেন আগামীদিনে একটা করে আইডি কার্ড তৈরি হয়। তিন মাসের মধ্যে এটা শ্রম দফতরকে সুনিশ্চিত করতে হবে”, জানান অভিষেক।