এ কোন ‘আচ্ছে দিন’ রাতের চেয়েও অন্ধকার! মোদী জমানায় দেশের ‘বিকাশ’ যে শিকেয় উঠেছে ফের মিলল তার প্রমাণ। ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশের সারিতে তুলে আনার লক্ষ্য স্থির করার কথা এ বারের স্বাধীনতা দিবসেই ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু মানব উন্নয়ন সূচকের নিরিখে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থার প্রকাশিত ২০২১ সালের ক্রমতালিকায় দেখা গেল, ১৯১টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১৩২তম স্থানে। ২০১৯ সালের চেয়ে এক ধাপ এবং ২০২০ সালের চেয়ে দু’ধাপ নেমে গিয়েছে ভারত। এবারের তালিকায় ভারতের স্থান চিন (৭৯), বাংলাদেশ (১২৯), ভুটান (১২৭) এবং শ্রীলঙ্কা (৭৩)-র চেয়েও নীচে।
ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) তাদের যে রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে, তাতেই স্পষ্ট হয়েছে এই চিত্র। চারটি বিষয় ধরে হিসাব কষেছে তারা— কোনও মানুষের সম্ভাব্য আয়ু, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গড় মেয়াদ, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রত্যাশিত মেয়াদ এবং মাথাপিছু জাতীয় আয়। এই সূচকে (এইচডিআই) ভারতের নম্বর দাঁড়িয়েছে ০.৬৩৩, যা ২০১৯ সালে ছিল ০.৬৪৫। মানব উন্নয়নের বিচারে মাঝারি মানের দেশগুলির সারিতেই রয়েছে ভারত। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রিপোর্টটি বলেছে, ভারতের জাতিগত সংখ্যালঘুরা মানসিক অশান্তির সব চেয়ে বেশি শিকার।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ভারতবাসীর গড় আয়ুষ্কাল, শিক্ষার প্রত্যাশিত মেয়াদ, শিক্ষার গড় মেয়াদ— সবই পাল্টেছে। ক্রয়ক্ষমতার নিরিখে ভারতে মাথাপিছু জাতীয় আয় ২০২০ সালের (৪,৮৬,৬৮৯ টাকা) থেকে ২০২১ সালে (৫,২৫,১৮১ টাকা) বেড়েছে। তবে ভারতে আর্থিক অসাম্য প্রকট। রিপোর্ট অনুযায়ী, এ দেশের ২১.৭ শতাংশ সম্পদ কুক্ষিগত রয়েছে সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ নাগরিকের হাতে। অথচ ভারতের ২৭.৯ শতাংশ মানুষ এখনও বহুমুখী দারিদ্রের শিকার।