বিজেপির অন্দরমহলে ঝগড়াঝাঁটি গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব যে লেগেই থাকে, সে কারুর অজানা নয়। এবার খুল্লামখুল্লা রাজ্য বিজেপির অন্দরে দলীয় কোন্দল নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি স্পষ্ট জানালেন, রাজ্য বিজেপির ৩ নেতা ৩ ট্র্যাকে দৌড়চ্ছে। বুঝতে বাকি থাকে না যে, ৩ নেতা বলতে নাম না করে তিনি রাজ্য বিজেপি প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। তিনি তাঁর মন্তব্যে স্পষ্ট মতামত জানান। বলেন, হ্যাঁ, এটা একটা সমস্যা। ৩ জন ৩ ট্র্যাকে দৌড়চ্ছে। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে নতুন দল। সেইজন্য যদিও নিয়ম-বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে বেশকিছু শিথিলতা এখানে রয়েছে। কিন্তু এখানে নেতারা নিজেরা নিজেদের মতো যাচ্ছে। এই ভাবমূর্তি তৈরি হওয়া একটা সমস্যা। লক্ষ্যপূরণ করতে হলে এই সমস্যা কাটিয়ে সবাইকে একজোট হয়ে এক লক্ষ্যে দৌড়নোটাই উচিত। সেটাই লক্ষ্য হওয়া দরকার। পাশাপাশি, তিনি খোলাখুলি এটাও স্বীকার করে নেন যে, কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক করে আনাটা বিজেপির একটা বড় ভুল। তাঁর কথায়, ‘কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে বাংলায় আনা ভুল হয়েছিল আমাদের। কমপ্লিট ভুল। রং নাম্বার।’ কেন? সেই ব্যাখ্যাও দেন স্বপন দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা হয়তো উত্তরপ্রদেশে ভালো সংগঠন করেছেন, নির্বাচনে ভালো ফল করেছেন, তার মানেই এই নয় যে তিনি পশ্চিমবঙ্গেও ভালো করবেন। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে এনে কোনও লাভ হয়নি। তিনি কী হিন্দি বলছেন, তা তো গ্রামগঞ্জের মানুষ বোঝেই না। আর সেখানেই গন্ডগোলের সূত্রপাত বলে মন স্বপন দাশগুপ্তের। তাঁর কথায়, ‘একদিকে মমতা কথা বলছেন, আরেকদিকে কৈলাস কথা বলছেন, আর তাতেই বহিরাগত বার্তা চলে যায়।’ এই গোটা বিষয়টিকে তিনি ‘অর্গানাইজেশনাল ফেলিওর’ বলেই উল্লেখ করেন। যদিও সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিপরীতে বিজেপির মুখ কে হতে পারেন? সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কোনও নাম বলেননি। তবে তাঁর ইঙ্গিত যেন অনেকটাই ছিল শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই! এমনটাই মত ওয়াকিবহল মহলের। সাংসদের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘যে সবথেকে জনতার মধ্যে প্রিয়, যাঁর গ্রহণযোগ্যতা আছে, সে-ই মুখ।’ পাশাপাশি, তিনি সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষকে ‘সেন্সর’ প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন। বলেন, ‘দিলীপের অনেক মন্তব্য করা উচিত হয়নি। রাজনীতিতে ভাষার উপর দখল বা লাগাম থাকা উচিত।’