আভাস মিলেছিল আগেই। এবার ফের প্রকাশ্যে এল তা। দেশে মোদী-শাহর জমানায় বিজেপির উপর থেকে ক্রমশই শিথিল হচ্ছে সঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণ। সঙ্ঘ ও মোদী সরকার তথা বিজেপির মধ্যে নানান বিষয়কে কেন্দ্র করে মতের মতানৈক্য দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি মোদীর হর ঘর তেরঙ্গাকে সমর্থন করেনি সঙ্ঘ। সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতদের নানা বিধ কমিটি থেকে সরিয়ে ফেলছেন মোদী-শাহ। এমতাবস্থায় বিজেপিসহ সঙ্ঘ অনুপ্রাণিত সংগঠনগুলির মধ্যে সমন্বয়ের সেতু বেঁধে রাখতে মরিয়া আরএসএস। সেই কারণেই আরএসএস আগামী ১০ থেকে ১২ই সেপ্টেম্বর সর্বভারতীয় সমন্বয় বৈঠকের ডাক দিয়েছে। ছত্রিশগড়ের রায়পুরে হতে চলেছে বৈঠক। শোনা যাচ্ছে, বিজেপি, বিএমএস, এবিভিপিসহ সঙ্ঘের ৩৬টি শাখা সংগঠনের শীর্ষ পদাধিকারীদের ওই বৈঠকে তলব করা হয়েছে। বিজেপির প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ এই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত নিজে সংগঠনগুলিকে সমন্বয়ের পাঠ দেবেন। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, আরএসএসের আদৰ্শ ও অনুশাসন মেনে মোদীকে সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজকর্ম পরিচালনা করার বার্তা দেবেন ভাগবত। আদৌ কি মোদী ভবগতের কথা শুনবেন? আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। কেন্দ্রীয় বিজেপির অন্দরে খবর, শাখা সংগঠনগুলির মধ্যে মোদী আমলে তেমন বোঝাপড়া নেই। কেউ কেউ বলছেন, সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ নীতিন গরকরি যখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন তখন নাগপুরের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ছিল একেবারে হরিহর আত্মার মতো। রাজনাথ আমলেও সঙ্ঘ-বিজেপির সম্পর্কের ওম বজায় ছিল। মোদী জমানায় বিজেপি সঙ্ঘকে আর পাত্তা দেয় না। মোদী প্রথম দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় অনেক ক্ষেত্রেই সঙ্ঘকে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদানীন্তন সভাপতি অমিত শাহ। অধুনা নাড্ডা সভাপতি হলেও অনেকেই বলেই দল পরিচালনা করছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নীতিন গড়করির মতো নেতাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ বিজেপির সংগঠন সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসালকে জোর করে সঙ্ঘ থেকে তুলে এনেছেন অমিত শাহ। নিজের দক্ষ প্রচারককে সঙ্ঘ ছাড়তে চায়নি, মোদী-শাহের জোরের কাছে সঙ্ঘের আপত্তি কার্যত ধোপে টেকেনি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে মোদী-শাহরা সঙ্ঘের বাণী আদৌ শুনবেন কিনা তা নিয়ে ঘনীভূত হয়েছে সংশয়।