রমরমিয়ে চলছে টাকার খেলা! সরকারি আঙিনায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কাটমানি। রাজ্যের আধিকারিক থেকে মন্ত্রী, সব্বাই কাটমানি নিচ্ছেন। দেদার ঘুষ নিয়েই কাজ হচ্ছে বিজেপিশাসিত ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্য কর্ণাটকে। ৪০ শতাংশের কাটমানির উপর ভিত্তি করেই নাকি চলছে কর্ণাটকের সরকার। প্রকাশ্য এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। নানাবিধ সরকারি কাজের বরাত থেকে শুরু করে হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ নির্মাণ, খেলার মাঠ গড়া, এমনকি স্কুলের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার ছাড়পত্র পেতেও নাকি ৪০ শতাংশ ‘কমিশন’ দিতে হয় কর্ণাটকে। কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ এনেছেন ঠিকাদাররা। প্রায় প্রতি প্রকল্পের ক্ষেত্রেই উঠে এসেছে এই অভিযোগ। উল্লেখ্য, ঠিকাদারদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ইস্যুতে গত বছর প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। মেলেনি কোনও সুরাহাসূত্র। ফের চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিকাদারদের সংগঠন। মোদীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন ঠিকাদাররা। বেঙ্গালুরু পুরসভার ঠিকাদার সংস্থার প্রেসিডেন্ট আর অম্বিকাপতি অভিযোগ করছেন, ডোমলুরে ৫ কোটি টাকার একটি খেলার মাঠ তৈরির জন্য দিতে হয়েছিল ৪০ শতাংশ কাটমানি।
পাশাপাশি, কর্ণাটকের স্টেট কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মঞ্জুনাথ দাবি করছেন, চিত্রদুর্গ জেলায় দুটি সরকারি হাসপাতাল তৈরির জন্যে ১৮ কোটি এবং ১০ কোটি টাকার প্রকল্পের জন্যে তাকেও কমিশন দিতে হয়েছিল। তিনিই জানাচ্ছেন, আগে মাত্র ৫ শতাংশ কমিশন দিতে হত। এখন সেই সংখ্যাটা ৪০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি সাফ অভিযোগ করছেন, মন্ত্রী-বিধায়ক-নেতা-আধিকারিক সবাই কাটমানি চক্রে জড়িত। কাটমানির এমন গ্রাস থেকে রেহাই পায়নি শিক্ষাক্ষেত্রও। কর্ণাটকের দুটি স্কুলের মালিক কিরণ প্রসাদ জানিয়েছেন, স্কুলে অগ্নি নির্বাপণের ছাড়পত্র পাওয়ার জন্যে তাকে ৩ লক্ষ টাকা দিতে হয়েছিল। যার মধ্যে ২০ হাজার টাকা সরকারি ফি এবং বাকি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আধিকারিক নিয়েছেন বলেই জানাচ্ছেন তিনি। মোদী-শাহ যতই ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের হয়ে গলা ফাটান না কেন, আসলে যে তা একেবারেই ফাঁপা, এই ঘটনায় তা ফের প্রমাণিত হল। বিজেপিশাসিত কর্ণাটকের কঙ্কালসার দশা জনসমক্ষে এল আরও একবার। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। প্রবল সমালোচনার মুখে বিজেপি।