সম্প্রতি চিকিৎসকদের আরও মানবিক এবং রোগীদরদী করে তুলতে এমবিবিএস পাঠক্রমে অ্যাটকম কর্মসূচী নিয়ে এসেছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। পরিভাষায় এর নাম অ্যাটিটিউড ও কমিউনিকেশন। কোন পরিস্থিতিতে কেমনভাবে রোগী ও তার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলবেন ডাক্তার, কেমন আচরণ করতে জনসংযোগ ঠিক কী রকম হবে, কেমন করে তিনি রোগী সঙ্গে কথা বলবেন, অ্যাটকম কর্মসূচীর অধীনে সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া চালু হয়েছে। এবার রোগী এবং তার পরিবার ও চিকিৎসকদের দূরত্ব দূর করতে শুরু করা হচ্ছে এল ফ্যামিলি অ্যাডাপটেশন নামে আরও এক কর্মসূচী।
উক্ত কর্মসূচীতে বলা হচ্ছে, দেশের প্রত্যেক হবু ডাক্তার পাঁচটি করে পরিবার দত্তক নেবেন। ওই পাঁচটি পরিবারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় দেখাশোনা করবেন সংশ্লিষ্ট হবু ডাক্তার। ওই পরিবারগুলির সদস্যদের অসুখবিসুখ, শরীরের খোঁজ-খবর, তাদের এলাকার স্থানীয় স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা, সমস্ত বিষয়ই দেখবেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। বলা হচ্ছে, এই কর্মসূচীর ফলে হবু চিকিৎসকদের সঙ্গে মানুষের নিবিড় যোগাযোগ গড়ে উঠবে। ডাক্তাররা রোগীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা বুঝতে পারবেন, সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই সাড়ে পাঁচবছরে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারি পড়ুয়া একজন প্রকৃত চিকিৎসক হয়ে উঠবেন। রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের তরফে জানা গিয়েছে, বাংলার বহু মেডিক্যাল কলেজই এমন দত্তক গ্রহণের তার প্রক্রিয়া চলছে।
গত ৩১শে আগস্ট কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্রের কথায়, ৫টি পরিবারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখবেন এক একজন ডাক্তারি পড়ুয়া। এর পাশাপাশি ওই পাঁচটি পরিবারের স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্য-সমস্যা, জনস্বাস্থ্য বা অন্য বিপদ, হঠাৎ করে বাড়তে থাকা রোগ ইত্যাদি বিষয়ের খোঁজখবর রাখবেন ওই পড়ুয়া। দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের গুরুত্ব কতটা, সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সংক্রান্ত বিপদ সামলায় কীভাবে, প্রভৃতি বিষয়ে ওই ডাক্তারি পড়ুয়া জানতে পারবেন ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবেন। এসবই সেই পড়ুয়াকে মানবিক চিকিৎসকরূপে গড়ে তুলবে। স্বভাবতই এই কর্মসূচীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।