একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে মুষল পর্ব চলছে! সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এবার যেমন দলের মধ্যেই বিভীষণ থাকার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন অনুপম হাজরা। শুধু তাই নয়, বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি ইস্যু কাজে না লাগাতে পারায় নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই একের পর এক অভিযোগের বোমা ফাটালেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক। তাঁর ৯ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি ফেসবুক লাইভ নিয়ে এখন তোলপাড় বিজেপি শিবির।
প্রসঙ্গত, বীরভূমে জমি তৈরি। কিন্তু বীরভূম কিংবা বোলপুর সাংগঠনিক জেলায় যাঁরা পদে রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরও উৎসাহ নেই। যা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম। ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে উৎসবের চেহারা। অথচ বীরভূমের বিজেপি নেতাদের একাংশ চুপ কেন? দলের পদাধিকারীদের রীতিমতো নজিরবিহীন ভাবে তোপ দেগে অনুপম বললেন, ‘আমি তথ্য নিয়ে কথা বলি। বীরভূম জেলার অনেক বিজেপি নেতারই তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাত রয়েছে। সেই সমস্ত তৃণমূল নেতাদের দয়াতেই অনেক বিজেপি নেতা দিনযাপন করছেন।’ আগামী দিনে সেই সমস্ত নেতার নাম ফাঁস করে দেখে নেওয়ারও হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অনুপম। ফেসবুক লাইভে তিনি স্পষ্ট জানান, ‘ওই সমস্ত নেতাদের মাথায় যে দাদারই হাত থাকুক না কেন আমি চুপ করে বসে থাকব না’।
তাঁর দাবি, ‘অনুব্রত মণ্ডল একজন অত্যাচারী নেতা। তার জন্য আমাদের দলের অনেকের প্রাণ গেছে। কিন্তু আমায় খুব অবাক করেছে যে, অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতর হওয়ার পর আমি বোলপুরে গিয়েছিলাম। দলের নেতারা সবাই জানতেন। অথচ যাঁরা পদে বসে রয়েছেন তাঁরা কেউই কোনও আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা তো দূরে থাক, আমার সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে আসেননি। অথচ পদে নেই এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ায় আমার সঙ্গে এসে দেখা করে নিজেদের উৎসাহ প্রকাশ করেছেন।’ অনুপম হাজরার কথায়, ‘বীরভূমের যারা সাংগঠনিক পদাধিকারী রয়েছেন তাঁদের উচিত ছিল, অনুব্রত ইস্যুতে বর্তমান সময়ে লাগাতার আন্দোলন সংগঠিত করে রাজনৈতিক ফসল ফলানো। এতে একদিকে যেমন সংগঠন শক্তিশালী হত। পাশাপাশি দলীয় কর্মী সমর্থকরাও ভরসা পেতেন। অথচ তাঁরা নীরব।’