২০০২ সালে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাত জুড়ে। আর সেই সময়েই গণধর্ষণ করা হয় ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়। সেই বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডের ১১ জন দোষীকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাতের বিজেপি সরকার। এ নিয়ে গোটা দেশজুড়েই বিতর্ক চলছে। কেন দোষীদের শাস্তি মকুব করা হল, সেই প্রশ্ন তুলে বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করেছেন সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে এবার মুখ খুললেন বিচারপতি মৃদুলা ভাটকর। তিনি বলেছেন, অপরাধীদের সাজা মকুব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুজরাত সরকার। তাতে আদালতের কোনও ভূমিকা নেই। উল্লেখ্য, ১১ দোষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গোধরা-কাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানো-সহ তাঁর মা-বোনকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারে হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। তাঁর পরিবারের মোট সাত জনকে খুন করা হয়। এই ঘটনায় ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবনের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন এক জনের মৃত্যু হয়। এবার সেই বাকি ১১ জনকেই মুক্তি দিয়েছে গুজরাত সরকার। আর তার পর থেকেই সরব বিরোধী দলগুলি। সাধারণ মানুষও আদালতকেই দায়ী করছেন। এহেন পরিস্থিতিতে বিচারপতি মৃদুলা বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না কেন মানুষ বিচারব্যবস্থাকে দোষারোপ করছে। আমি সকলকে জানাতে চাই, মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য বিচারপতিরা যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন।’