ত্রিপুরার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ গেল এক বিএসএফ জওয়ানের। শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর মহকুমার আনন্দ বাজার থানার অধীনে এক সীমান্তবর্তী এলাকায়। প্রায় জনবিহীন ওই জায়গায় ভারতের দুই রাজ্য ত্রিপুরা ও মিজোরাম এবং বাংলাদেশের ত্রৈসীমানা রয়েছে। সেখানেই এদিন কাছে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সঙ্গে ভয়ঙ্কর গুলিযুদ্ধের পর মৃত্যু হয়েছে ওই আধাসেনা জওয়ানের। জানা গিয়েছে ওই আধাসেনা সদস্যকে উত্তর ত্রিপুরা জেলার আনন্দবাজার থানার অন্তর্গত বিএসএফের ১৪৫ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ সিমানাপুর ২ ফাঁড়িতে মোতায়েন করা হয়েছিল। পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের ওই পার থেকেই জঙ্গিরা আধাসেনার ওই ফাঁড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই জওয়ানের শরীর ফুঁড়ে দেয় চার-চারটি গুলি। সন্দেহ করা হচ্ছে এই হামলার পিছনে রয়েছে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা বা এনএলএফটি জঙ্গি গোষ্ঠীর। বিএসএফ সূত্র জানা গিয়েছে নিহত ওই বিএসএফ সদস্যের নাম গ্রিজেশ কুমার উদে, বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তাঁর বাড়ি মধ্যপ্রদেশের মান্ডলা জেলায়। গুলিযুদ্ধের গুরুতর জখম হওয়ার পর তাঁকে আগরতলার আইএলএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই বিএসএফ-এর ওই হাবিলদার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ওই জওয়ানের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জিবিপি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার জানিয়েছেন, বিনা প্ররোচনাতেই গুলি ছুড়তে শুরু করেছিল জঙ্গিরা। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ। ওই সময় গ্রিজেশ কুমার উদে তাঁর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে সীমান্তে টহলদারি অভিযান পরিচালনা করছিলেন। অতর্কিত হামলা চালায় জঙ্গিরা। এসপি কিরণ কুমার বলেছেন, “বিএসএফ সৈন্যরা উত্তর ত্রিপুরা জেলার আনন্দবাজার থানার অন্তর্গত সিমানাপুর সীমান্ত ফাঁড়িতে নিয়মিত টহলদারি চালাচ্ছিল। হঠাৎ কাঁটাতারের বেড়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকা উগ্রপন্থীরা বিএসএফ সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বিএসএফ সদস্যরাও পাল্টা জবাব দেয় এবং একটি গুলির যুদ্ধ শুরু হয়। দুর্ভাগ্যবশত, গুলিযুদ্ধের সময় এক বিএসএফ জওয়ানের চারটি বুলেট লেগেছে।” হামলায় জড়িত সকল জঙ্গিই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ত্রিপুরা পুলিশ ও বিএসএফ-এর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আত্মগোপন করে থাকা জঙ্গিদের ধরতে চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে।