বাংলার প্রতি মোদী সরকারের দুয়োরানিসুলভ আচরণ এখনও অব্যাহত। বঞ্চনা চলছেই। যার জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা যায় ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দেওয়া। এর ফলে গ্রামবাসীরা বারবার সংকটে পড়েছেন। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজও আটকে গিয়েছে। গ্রামগুলি, উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। নদীর বাঁধ, রাস্তা নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি কাজও বন্ধ। কাজের দাবিতে জবকার্ড হোল্ডাররা বিডিও এবং পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে হাজির হচ্ছেন। দপ্তরের আধিকারিকেরা বলছেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা না এলে জব কার্ড হোল্ডারদের কাজ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবুও মোদী সরকার একেবারেই নিস্পৃহ। এর জেরে বন্ধ হয়ে রয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নদী বাঁধের কাজ। বাঁধের যে যে জায়গায় ফাটল রয়েছে বা ক্ষতি হয়েছে, শুধুমাত্র সেগুলোই সেচ দফতরের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। নতুন করে বাঁধের কাজ আর হচ্ছে না। বিগত বছরগুলিতে বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে, প্রায় সব বাঁধই ক্ষতির কবলে পড়েছে। গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং ইত্যাদি জায়গাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থানীয়দের অভিযোগ, নতুন করে কাজ হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের ছাড়াও ডায়মন্ডহারবার, সোনারপুর, বিষ্ণুপুর ইত্যাদি জায়গাতেও একাধিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে টাকার কারণে নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করা বা রাস্তা সংস্কার করের কাজের জন্য লোকজন মিলছে না। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি ব্লকে টাকার অভাবের কারণে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুকুর ও খাল খননের কাজও আটকে রয়েছে। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্যে নিয়মিত খালবিল ও ড্রেন সাফাইয়ের যে কাজ হওয়ার কথা তাও সময় মতো করা যাচ্ছে। সুন্দরবনে রোপিত কোটি কোটি ম্যানগ্রোভের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের। বন দফতর সূত্রে খবর, যেখানে ম্যানগ্রোভ মরে গিয়েছে, সেখানে নতুন করে বীজ বপনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আধিকারিকরা বলছেন, টাকার অভাবে জব কার্ড হোল্ডারদের জোর করে কাজও করানো যাচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে, মোদী বঞ্চনার বৈষম্যমূলক আচরণের কারণেই বাংলার গ্রামীণ উন্নয়নের গতি রুদ্ধ হচ্ছে বারবার। তাহলে কি প্রাপ্য টাকা না দিয়ে বাংলার প্রতি একুশের হারের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে মোদী সরকার? উঠছে প্রশ্ন। বইছে সমালোচনার ঝড়ও।