মোদী সরকারের আমলে পেট্রোপণ্য থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি ক্রমশ দুর্ভোগ বাড়িয়েছে আমজনতার। এবার জনসাধারণের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াল দুধের ঊর্ধ্বগামী মূল্য। সারা দেশেই বুধবার থেকে দাম বাড়ল দুধের। বাদ পড়েনি কলকাতাও। লিটার প্রতি দুধের দাম ২ টাকা করে বৃদ্ধি করেছে আমূল ও মাদার ডেয়ারি। বুধবার সকাল থেকেই বেড়েছে দাম। বেশি টাকা খরচ করেই দুধ কিনতে হচ্ছে সকলকে। আমূল গোল্ডের ৫০০ এমএল-এর প্যাকেটের দাম ৩০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩১ টাকা, আমূল তাজার ৫০০এমএল-এর দাম ২৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫ টাকা। মাদার ডেয়ারির যে ক্রিম-দুধ, তার দাম দাঁড়াবে ৬১ টাকা প্রতি লিটার। আগে এই দাম ছিল ৫৯ টাকা। দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জনৈক বিক্রেতা জানিয়েছেন, “আগে ক্রেতারা যেখানে তিনটে করে প্যাকেট কিনত, এখন সেখানে দুটো করে প্যাকেট কিনছে। ফলে দাম বৃদ্ধির প্রথম দিনেই ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে।” আর এক বিক্রেতা বলেন, আগে থেকেই খবর ছড়িয়ে পড়াতে খুব অসুবিধা হয়নি। তবে অনেক ক্রেতাই জানতে চেয়েছেন, কেন দুধের দাম এভাবে বাড়ল।
পাশাপাশি দুধের মূল্য বৃদ্ধিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারাও। জনৈক এক ক্রেতা বলেন, “দাম বাড়লেও নিতেই হবে। দাম বৃদ্ধির ফলে অসুবিধা হলেও কেউ শুনবে না।” আর এক ক্রেতা বলেন, “দিন দিন যেমন জিনিসের দাম বাড়ছে, তাতে চলা খুব মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মধ্যবিত্তের জন্য এটা খুবই সমস্যার।” আর একজনের মতে, “দুধের দাম প্রচন্ডই বেড়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে এখন ছোট দুধ কিনছি।” উল্লেখ্য, আপাতত শুধুমাত্র আমূল ও মাদার ডেয়ারি দুধের দাম বাড়ালেও অনুমান করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই বাড়তে পারে অন্য কোম্পানির দুধের দামও। এক বিক্রেতা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এই সপ্তাহের মধ্যেই অন্য কোম্পানিও দুধের দাম বাড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে মেট্রো-সহ অন্য ব্র্যান্ডের দুধের দামও যে বেড়ে যাবে তা নিশ্চিত। প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিক কোম্পানি দুধের দাম বৃদ্ধি করেছিল। কোম্পানিগুলি জানিয়েছিল, গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ও চাষিদের লাভের মার্জিন দিতেই কোম্পানিগুলি দুধের দাম বৃদ্ধিতে বাধ্য হয়েছে। গত এক বছরের হিসেব ধরলে দুধের দাম প্রতি লিটারে প্রায় ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা বেড়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, দুধের দাম বৃদ্ধির ফলে সরাসরি প্রভাব পড়বে চায়ের দোকানে। কারণ, বেশিরভাগ চায়ের দোকানে প্যাকেটজাত দুধ থেকেই চা তৈরি হয়। এই দাম বৃদ্ধির ফলে পরবর্তীতে চায়ের দাম বাড়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। এছাড়া, হোটেলেও বাড়তে পারে বিল। অর্থাৎ যে যে ব্যবসায় প্যাকেটজাত দুধ ব্যবহার করা হয়, সেখানেই রয়েছে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা।