সোমবারই ২০১৭ সালের দায়ের হওয়া এক জনস্বার্থ মামলা অস্বস্তি বাড়িয়েছে এ রাজ্যের শাসকদলের। এই মামলায় ১৯ জন নেতা মন্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট তাতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডিকে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে ঝাড়খণ্ডে টাকা-সহ বিধায়ক গ্রেফতারির পর আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। রাজীব কুমার নামে এক আইনজীবী ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করার। তাঁকে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। লালবাজার তদন্ত করছে। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এই ইস্যুকে সামনে রেখেই এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন।
সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘ভয়ঙ্কর ঘটনা। জানি আমরা। পাশের একটা রাজ্যে এটা ঘটেছে। কয়েকশো জনস্বার্থ মামলা করেছে। সুপ্রিম কোর্ট পিআইএলকে পাবলিক ইন্টারেস্টের পথ বলেছেন, পয়সা ইনকাম লিটিগেশন। তা হলে একটা লোক কয়েকশো জনস্বার্থ মামলা করছে। তাকে তো পদ্মশ্রী বা পদ্মবিভূষণ দেওয়া উচিৎ ছিল। দেখা যাচ্ছে সে একটা করে জনস্বার্থ মামলা করে, আর যাদের বিরুদ্ধে করে তার বিরুদ্ধে চাপ দিয়ে টাকা নেয়। বলে টাকা দিলে মামলা প্রত্যাহার করবে না হলে কোর্টের আদেশ নিয়ে আসবে। এটা একটা চক্র। এটা শুধু প্রতিবেশী রাজ্যে চলছে না, অনেক রাজ্যেই ঘটছে। আমাদের রাজ্যেও হয়ত ঘটছে। এটা দেখা উচিৎ। এই পর্দাগুলো ফাঁস হওয়া উচিৎ’।
প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত গত ১ আগস্ট। ৫০ লক্ষ টাকা প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার করা হয় রাজীব কুমার নামে এক আইনজীবীকে। রাজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ঝাড়খণ্ডের এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দিয়ে ১০ কোটি টাকা আদায়ের। কীভাবে এই টাকা আদায়? কলকাতার এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রাঁচি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন রাজীব কুমার। পরে সেই মামলা তুলে নেওয়ার ‘টোপ’ দিয়েই ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে। পুলিশের দ্বারস্থ হন ঝাড়খণ্ডের ওই ব্যবসায়ী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জনস্বার্থ মামলা নিয়ে সুখেন্দুশেখর রায়ের এদিনের মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।