এবারের কমনওয়েলথ গেমসে সব মিলিয়ে মোট ৬১টি পদক পেয়েছে ভারত। তার মধ্যে ২২টি সোনা। পদক তালিকায় অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও কানাডার পরে চতুর্থ স্থানে শেষ করেছেন পিভি সিন্ধুরা। অ্যাথলেটিক্স থেকে শুরু করে কুস্তি, বক্সিং, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিসে সোনা জিতেছেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। সব থেকে বেশি সোনা এসেছে কুস্তিতে। ভারতের ছয় কুস্তিগির কমনওয়েলথ গেমসের পোডিয়ামে জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়েছেন। ভারোত্তোলন, বক্সিং, ব্যাডমিন্টন ও টেবিল টেনিসে তিনটি করে সোনা এসেছে ভারতের। লন বোলে এই প্রথম সোনা পেয়েছে ভারত। অ্যাথলেটিক্সেও সোনা এসেছে। এ ছাড়া দু’টি সোনা জিতেছেন ভারতের প্যারা-অ্যাথলিটরা।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, ভারতের ২২ স্বর্ণপদকজয়ীদের :
অচিন্ত্য শিউলি (ভারোত্তোলন, পুরুষদের ৭৩ কেজি): বাংলার ২০ বছরের এই ভারোত্তোলক এ বারই প্রথম কমনওয়েলথ গেমসে নেমেছিলেন। নিজের বিভাগে মোট ৩১৩ কেজি (স্ন্যাচে ১৪৩ কেজি ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৭০ কেজি) ভার তুলেছেন তিনি, যা গেমস রেকর্ড। এর আগে ২০২১ সালে জুনিয়র বিশ্ব ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় রুপো জিতেছিলেন অচিন্ত্য। কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপেও দু’বার সোনা জিতেছেন তিনি।
জেরেমি লালরিননুঙ্গা (ভারোত্তোলন, পুরুষদের ৬৭ কেজি): মিজোরামের ছেলে জেরেমি নিজের বিভাগে মোট ৩০০ কেজি (স্ন্যাচে ১৪০ কেজি ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৬০ কেজি) ভার তুলেছেন। ১৯ বছরের এই তরুণ ভারোত্তোলক ২০১৮ সালে গ্রীষ্মকালীন যুব অলিম্পিক্সে ছেলেদের ৬২ কেজি বিভাগে ভারতের হয়ে সোনা জিতেছিলেন। কমনওয়েলথেও দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি।
মীরাবাই চানু ( ভারোত্তোলন, মহিলাদের ৪৯ কেজি): টোকিয়ো অলিম্পিক্সে একটুর জন্য সোনা হাতছাড়া হয়েছিল। কিন্তু কমনওয়েলথে হাসতে হাসতে সোনা জিতেছেন মণিপুরের এই মেয়ে। নিজের বিভাগে মোট ২০১ কেজি (স্ন্যাচে ৮৮ কেজি ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১৩ কেজি) ভার তুলেছেন তিনি।
রূপা রানি তিরকে, লাভলি চৌবে, নয়নমণি সাইকিয়া ও পিঙ্কি সিংহ ( মহিলাদের লন বোল): এই প্রথম লন বোলে সোনা জিতেছে ভারত। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড ও ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সোনা জিতেছেন তাঁরা।
বজরং পুনিয়া (কুস্তি, পুরুষদের ৬৫ কেজি): টোকিয়ো অলিম্পিক্সে না পারলেও কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছেন বজরং। কমনওয়েলথ গেমসে পদকের হ্যাটট্রিক করেছেন এই কুস্তিগির। ২০১৪ সালে গ্লাসগোতে রুপো ও ২০১৮ সালে গোল্ড কোস্টে সোনা জিতেছিলেন তিনি।
সাক্ষী মালিক (কুস্তি, মহিলাদের ৬২ কেজি): ফাইনালে পিছিয়ে পড়েও সোনা জিতেছেন হরিয়ানার এই কুস্তিগির। এর আগে ২০১৪ সালে গ্লাসগোতে মহিলাদের ৫৮ কেজি বিভাগে রুপো ও ২০১৮ সালে গোল্ট কোস্টে মহিলাদের ৬২ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। প্রথম ভারতীয় মহিলা কুস্তিগির হিসাবে ২০১৬ সালের রিয়ো অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন সাক্ষী।
দীপক পুনিয়া (কুস্তি, পুরুষদের ৮৬ কেজি): ফাইনালে পাকিস্তানের মহম্মদ ইনামকে হারিয়ে সোনা জিতেছেন দীপক। ভারতীয় সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) দীপক ২০১৯ সালের বিশ্ব কুস্তি প্রতিযোগিতায় ৮৬ কেজি বিভাগে রুপো জিতেছিলেন।
রবি কুমার দাহিয়া (কুস্তি, পুরুষদের ৫৭ কেজি): কুস্তিতে ভারতকে আরও একটি সোনা এনে দিয়েছেন রবি। ফাইনালে নাইজিরিয়ার এবিকেওয়েনিমো ওয়েলসনকে ১০-০ পয়েন্টে হারিয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের টোকিয়ো অলিম্পিক্সে রুপো ও ২০১৯ সালের বিশ্ব কুস্তি প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। এ ছাড়া তিন বার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন রবি।
বীনেশ ফোগাট (কুস্তি, মহিলাদের ৫৩ কেজি): কমনওয়েলথ গেমসে সোনার হ্যাটট্রিক করেছেন বীনেশ। এর আগে ২০১৪ সালে গ্লাসগো ও ২০১৮ সালে গোল্ড কোস্টেও নিজের বিভাগে সোনা জিতেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়ান গেমসেও সোনা জিতেছিলেন বীনেশ।
নবীন মালিক (কুস্তি, পুরুষদের ৭৪ কেজি): প্রথম বার কমনওয়েলথ গেমসে খেলতে নেমে সোনা জিতেছেন ১৯ বছরের নবীন। ফাইনালে পাকিস্তানের মহম্মদ শরিফ তাহিরকে হারিয়েছেন তিনি। গত বছর অনূর্ধ্ব-২৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও চলতি বছরে অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও সোনা জিতেছিলেন নবীন।
নিখাত জারিন (বক্সিং, মহিলাদের ৫০ কেজি): নিখাতের উপর নজর ছিল গোটা দেশের। হতাশ করেননি তিনি। কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম সোনা জিতেছেন। এর আগে ২০১৯ সালের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন এই মহিলা বক্সার।
অমিত পাঙ্ঘাল (বক্সিং, পুরুষদের ৫১ কেজি): নিখাতের মতো কমনওয়েলথ গেমসে নিজের প্রথম সোনা জিতেছেন অমিতও। আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থার বিচারে ৫২ কেজি বিভাগে এখন বিশ্বের এক নম্বর বক্সার তিনি। তিনিই এক মাত্র ভারতীয় পুরুষ বক্সার যিনি বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশ…