মাতালদের আখড়ায় তৈরি হয়েছিল বলাগড়ের গুপ্তিপাড়া রথের সড়ক এলাকায়। এবার সেখানে মাতালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তিনি জানিয়েছেন, ‘লোকসভার সময়ে ছত্রিশ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকা অঞ্চলে, নয় হাজারের কিছু বেশি ভোটে জিতেছি। পরের বার এক দু-হাজার যদি কমে যায় তো যাক, তবু ওঁর বা ওঁর মতো কারও ভোট আমি চাই না। উপরের কথা গুলো বলেছি গুপ্তিপাড়া রথসড়ক বাজারে। একটি পরিবার ওই রকম জন বহুল এলাকায় গত কুড়ি বাইশ বছর ধরে মদের ব্যবসা করে।আগে ঝুপড়ি ঘর ছিল, এখন বিশাল পাকা দালান। তার নাকি সব বন্দোবস্ত করে রাখা আছে। শুনতে পেলাম ওই জায়গায় নাকি কবে দুটো খুন পর্যন্ত হয়ে গেছে। তবু তার ব্যবসা বন্ধ হয়নি।’
তৃণমূল বিধায়ক জানান, কিছু নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তিনি ওই এলাকার পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, দেখতে গিয়ে তাঁকে যে ঘটনার সামনে পড়তে হয়েছে, তাতেই তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন তিনি। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গতকাল কিছু মানুষ আমাকে এসে জানান, মাতাল লোকগুলো মদ খেয়ে রোজ ঝগড়া, মারামারি, অকথ্য গালি-গালাজ করে। মেয়েদের টোন কাটে। অনেককে অনেক বলার পরেও কিছুতে ঠেক বন্ধ হচ্ছে না। আপনি কিছু একটু করুন। তাই গতকাল আমাকে যেতে হয়েছিল ওই ঠেকে। তখন ঠেক সঞ্চালক এক মহিলা, বাপরে! কী তার গলার তেজ! চেঁচিয়ে পুরো বাজারের লোক জমা করে ফেলেছিল। যেন বাড়িতে ডাকাত পড়েছে! বলে সে, মনে আছে ভোটের সময় আমার দরজায় হাত জোর করে দাড়িয়ে ছিলেন! আবার আসবেন না ভোট চাইতে? তখন মজা বোঝাবো! বলি তাকে, ‘মহোদয়া আপনি আমাকে ভোট দিয়েছিলেন কী দেননি সেটা কে জানে! যদি দিয়ে থাকেন আর দেবেন না’!
তাঁর কথায়, ‘আমি তাঁকে বলি, আপনি লোককে বিষ খাওবেন আর আমি তা বসে বসে দেখবো, সেটা হবে না। সংগ্রামপুর, বর্ধমান, হাওড়ার মতো এখানেও মানুষ মরুক সেটা হতে দেওয়া যাবে না। অঞ্চলের সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে আমাকে যতো কঠোর হতে হয় আমি হব। কাল থেকে যেন আর এখানে মদ বিক্রি না করা হয়। বিশাল বাড়ির মালকিন, কয়েকটি দোকান ভাড়া দেওয়া আছে। তবু বলে সে, আমাকে একটি কাজ দিন তাহলে আর মদ বেচবো না। বলি তাঁকে, চলো এখনি তোমাকে কাজ দেবো। আমার জিরাটের অফিসটা ঝাট দেবে মুছবে ছয় হাজার দেবো প্রতি মাসে। এবার সে আর রাজি নয়। মদের দোকানে যেখানে দিনের দু তিন হাজার সহজ কামাই, সে খাটতে যাবে কেন! বাড়ির সামনে রথ সড়ক বাজার, চাইলে সে সেখানেই একটা সবজি দোকান করতে পারে। হাজার লোক সেভাবেই রোজগার করছে আর ভালো ভাবে আছে। তিনি সেটা করতে পারবেন না। সন্মানে বাধে। অথচ মদ বিক্রি করবেন।’