তিনি সাংসদ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকও। তবে প্রশাসনিক কোনও পদে নেই। তা সত্ত্বেও কেন ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর কীভাবেই বা মেধাতালিকায় থাকা সকলকে দিলেন চাকরির আশ্বাস? শাসকদল তৃণমূলের দিকে একের পর এক সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন বিরোধীরা। শনিবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে বিরোধীদের পালটা জবাব দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কেবলমাত্র নিয়োগ সংক্রান্ত জট কাটানোর চেষ্টায় অভিষেক এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলেই সাফ জানালেন তিনি। কেন অযথা জটিলতা তৈরি করছেন, বিরোধীদের পালটা প্রশ্নও ছুঁড়ে দিলেন কুণাল।
শুক্রবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অভিষেকের ওই বৈঠকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশাপাশি তিনিও হাজির ছিলেন। তাঁর সাফ কথা, অভিষেক জট কাটাতে উদ্যোগী হয়েছেন, তাই নাকি ‘গায়ে জ্বালা ধরেছে’ বিরোধীদের। এমনকী বিরোধীদের এই ধরনের প্রশ্নে ‘ঈর্ষাজনিত পোড়া গন্ধ’ও খুঁজে পাচ্ছেন তিনি।
অভিষেকের অফিসে চাকরিপ্রার্থীদের বৈঠক নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, এই সংক্রান্ত ক্ষেত্রে আপত্তি করা থেকে এটাই বোঝা যায় যে, এই জট খুলুক বা চাকরিপ্রার্থীরা চাকরি পাক, তা চায় না বিরোধীরা। এমনকী বিরোধীদের ‘মুখোশ’ খুলে তাঁর আক্রমণ, ‘বিরোধীরা (চাকরি)প্রার্থীদের নিয়ে রাজনীতি করতে আগ্রহী’। কেন অভিষেকের অফিসে বৈঠক? তারও জবাব দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এটি সরকারি উদ্যোগ নয়, এটি দলীয় উদ্যোগ। বৈঠকে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু এবং কুণাল ঘোষ। কুণাল এবং অভিষেক রাজ্য সরকারের কেউ নন। অভিষেক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কুণাল ঘোষ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র। আর ব্রাত্য বসু মন্ত্রী হলেও তিনি দলের নেতা। বৈঠকে কোনও সরকারি আধিকারিক ছিলেন না। কুণালের সাফ কথা, দলের তরফে অভিষেক জট কাটাতে বৈঠক করতেই পারেন। এটাই সদিচ্ছার ইঙ্গিত। আন্তরিকতার প্রমাণ।
পাশাপাশি বিরোধী দলগুলিকেও তাদের অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। রাজধানীতে পদ্ম শিবিরের পার্টি অফিসে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে বিদেশমন্ত্রী নিজেও উপস্থিত ছিলেন। আবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএম অফিসে পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে হলদিয়া পেট্রো কেমিক্যালস আসার আগে যে বৈঠক হয়েছিল, সেই কথাও সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিমদের মনে করিয়ে দিয়েছেন কুণাল বাবু। কংগ্রেসকেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মনমোহন সিং-এর আমলে কীভাবে দল চলত।