সব কিছুই ঠিকঠাক চলছে। একদম জলবৎ তরল। প্রতিবছর যেমন হয় বাইশেও তেমনটিই হয়েছে। পার্থ-অর্পিতা কাণ্ড তাতে কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। মানে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের মাঝেই কার্যত নিঃশব্দে বেড়ে গেল রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বেতন। আর সেটাও ৩ শতাংশ হারে। যদিও নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, এটা রুটিন বৃদ্ধি। প্রতিবছর জুলাই মাসে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ে।
যদিও বাংলার সরকারি তথ্য বলছে, প্রতি বছর জুলাই মাসে বেতন বৃদ্ধি হয় সরকারি কর্মীদের। এবছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জুলাই মাসের বেতনের টাকা ঢোকার কথা। সেখানেই তিন শতাংশ হারে বাৎসরিক বেতন বেশি ঢুকবে। প্রতি বছর মার্চ মাস ছাড়া বাকি ১১টি মাসের শেষ কাজের দিনের আগের দিন বেতন পান সরকারি কর্মীরা। তার আগে ট্রেজারি থেকে কর্মীদের নথিভুক্ত মোবাইল নম্বরে মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, কত টাকা তিনি বেতন পাচ্ছেন। সরকারি কর্মিমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই মেসেজ ইতিমধ্যেই অনেকের ফোনে চলে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, জুলাইয়ে নির্ধারিত হারেই বেতন বৃদ্ধি হয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন বা বেসিকের ৩ শতাংশ বৃদ্ধির জেরে মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ এবং বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাতা বা এইচআরএ-ও কিছুটা বাড়ছে। কারণ মূল বেতনের উপর ওই দু’টি ভাতা নির্ধারিত হয়।
রাজ্য সরকারি কর্মীরা এখন মূল বেতনের ওপর ৩ শতাংশ হারে ডিএ এবং ১২ শতাংশ হারে এইচআরএ পান। রাজ্যের পুরসভা, পঞ্চায়েত কর্মী, সরকারি অনুদানে চলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরাও বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পান। সরকারি দফতরে বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে চুক্তিতে নিযুক্ত কর্মীদেরও জুলাই মাসে একই হারে বেতন বৃদ্ধি হয়। তাই তাঁরাও এবার বঞ্চিত হচ্ছেন না। তবে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের পেনশনের ক্ষেত্রে বাৎসরিক বৃদ্ধির সুবিধা নেই। ডিএর হার বাড়লে তবেই পেনশন বৃদ্ধি হয়। চলতি বছর রাজ্য সরকারি কর্মী ও পেনশন প্রাপকদের ডিএর হার বাড়ানো হয়নি। ফলে তাঁরা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে একই টাকা পেনশন পাচ্ছেন। পেনশন প্রাপকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসে ট্রেজারি থেকে তাঁরা যে মেসেজ পেয়েছেন, তাতে পেনশনের অর্থ একই রয়েছে। ২০২০ সালে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার সময় অর্থদপ্তর রোপা-২০১৯ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। তাতেই বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির উল্লেখ করা হয়। কিন্তু প্রতি বছর ডিএর হার বৃদ্ধি হবে, এমন কথা তাতে বলা হয়নি।