করোনার বাতাবরণে দু’বছর পালন হয়নি শহিদ দিবস। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতি। দু’বছর পর ধর্মতলায় শহিদ দিবস পালন করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিছু দিন আগেই নিরাপত্তা বেষ্টনী পার করে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়েন এক আগন্তুক। সারা রাত মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের বাইরে অপেক্ষা করেছিলেন ওই ব্যক্তি। পরে গ্রেফতার করা হয় তাকে। পুরনো ঘটনার থেকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশ উপলক্ষে এবার আরও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে মুখ্যমন্ত্রীর ধারে কাছে কেউ পৌঁছতে না পারে, তার জন্য আরও কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পুলিশ। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে হয়েছে শহিদ দিবসের মঞ্চ। সেই মূল মঞ্চের নিরাপত্তা ভাগ করা হয়েছে তিনটি জোনে।
জোন ১– এর মধ্যেই আবার প্রথম জোনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।ডায়াস ও ভিক্টোরিয়া হাউজ (কোলাপসিবল গেট)২) মূল মঞ্চের সামনে ডি জোনের ভিতরের অংশ ৩) মূল মঞ্চের সামনে ডি জোনের বাইরের অংশ। এই প্রথম জোনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ১ জন ডিসি, ৩ জন এসি, ৫ ইনস্পেক্টর, ৫ জন এসআই/ সার্জেন্ট, ৩০ জন (আনআর্মড)পুলিশ, ৯৫ জন সাদা পোশাকে পুলিস (মহিলা ও পুরুষ), ৪০ জন আর এ এফ (মহিলা ও পুরুষ), মঞ্চের সামনে ডি জোনের বাইরে থাকবে ২০ জনের উইনার্স টিম।
জোন ২– মঞ্চের পিছন দিক ও সংলগ্ন এলাকা– এই জোনকে সাতটি ভাগে ভাগ করে নজরদারি চলবে। তার মধ্যে পাঁচটি জায়গায় ছাদ থেকে চলবে নজরদারি। জোন ২-এ নিরাপত্তার দায়িত্বে ১ জন ডিসি, ৩ জন এসি, ৬ জন ইনস্পেক্টর, ১২ জন এসআই, ১৭ জন ASI, ৬৫ জন আনআর্মড পুলিশ, ১০ জন সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবেন।
এ ছাড়া ২১ জুলাইকে কেন্দ্র করে গোটা শহরকে ১০ জোনে ভাগ করে করা হয়েছে পুলিশি বন্দোবস্ত । প্রত্যেক জোনে ৫/৭ টি করে পিকেট থাকবে । প্রত্যেক জোনের কোথাও একজন তো কোথাও দু’জন ডিসি থাকবেন। তাঁদের অধীনে থাকবেন অন্তত ৭০/৮০ জন করে পুলিশ ।এ ছাড়াও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মঞ্চের আশপাশের হাইরাইজ বিল্ডিং থেকে নজরদারি চলবে। মেট্রো রেলে অতিরিক্ত পুলিশ, চলবে ড্রোনে নজরদারিও।
মঞ্চকে কেন্দ্র করে ৮টি জায়গার ছাদে থেকে ভিডিওগ্রাফি করা হবে। থাকবে অ্যান্টি সাবোটাজ টিম। করোনার কারণে বন্ধ ছিল গত দু’বছরের ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান। এ বার সংক্রমণের হার অতটা ভয়ঙ্কর এখনও পর্যন্ত না হওয়ায়, ধর্মতলাতেই শহিদ দিবস পালন হচ্ছে । ফলে অনেক বেশি ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা। সেই সঙ্গে এ বার বাড়তি চাপ টালা ব্রিজ বন্ধ থাকায়। অন্যদিকে জেলা থেকে প্রচুর গাড়ি আসার সম্ভবনা রয়েছে অনুষ্ঠানস্থলের দিকে । ফলে তিনটে জোনে ভাগ করে করা হচ্ছে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা আই এ জোনে থাকছে ৭ টি পার্কিং প্লেস, B জোনে ১৫ টি পার্কিং প্লেস, সি জোনে ১৯ টি পার্কিং প্লেস।
গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ডিসি ট্রাফিকের নেতৃত্বে বুধবার রাত ৯টা থেকে ডিউটি মোতায়েন থাকতে বলা হয়েছে। যাতে গাড়িগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় পার্কিং করা যায়। শহরের ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পিকেট থাকবে পুলিশের, ১৫ টি জায়গায় রাখা থাকবে অ্যাম্বুল্যান্স। এই সমাবেশে প্রচুর মানুষ আসবেন ধরে নিয়েই বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে কলকাতার মেট্রো স্টেশনে। শহরের একাধিক মেট্রো স্টেশন নোয়াপাড়া, বেলগাছিয়া, শ্যামবাজার, সেন্ট্রাল, এসপ্ল্যানেড, চাঁদনি, কালীঘাটে আঁটোসাঁটো করা হয়েছে নিরাপত্তা । সব স্টেশনের একাধিক টিকিট কাউন্টার খুলে রাখা হবে। আজকের জন্য অতিরিক্ত ১০৭ কর্মী থাকছেন।