আজ একুশে জুলাই। দু’বছর পর ফের ধর্মতলায় তৃণমূলের শহীদ স্মরণের অনুষ্ঠানে জড়ো হয়েছেন কর্মী-সমর্থকরা। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনতে কাতারে কাতারে মানুষ আসবেন মহানগরে। বহু ধর্মের মিলন ক্ষেত্রে হয়ে উঠবে ধর্মতলা। ২০২০, ২০২১ সালে চেনা ধর্মতলাকে মিস করেছে দু-বছর করোনার কারণে ভার্চুয়াল মাধ্যমে একুশ জুলাইয়ের আয়োজন করেছে তৃণমূল। এ বছর করোনার দাপট কম। ফের ধর্মতলায় ফিরেছে একুশে জুলাই। ফের চেনা ধর্মতলা ধরা দিল আজ। নেত্রী বক্তব্য শুনতে হাওড়া-শিয়ালদহ থেকে অগনিত মানুষ আসতে শুরু করেছে। সব জমায়েত, মিছিল আজ ধর্মতলামুখী। সেন্ট্রাল পার্ক, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র থেকে হাজার হাজার মানুষ আসছে। শহরতলি থেকে মানুষের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার মঞ্চে উঠেই মোদী সরকারকে একহাত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “দেশ ছেড়ে হাজারের উপর শিল্পপতি চলে গিয়েছেন। এটাই বিজেপির উন্নয়নের মডেল! লোকসভায় একটিও আসন বিজেপিকে জিততে দেওয়া যাবে না।”
এদিন মমতা বললেন, “চব্বিশে মানুষের বৃষ্টিতে ভেসে চলে যাবে বিজেপি। বৃষ্টি দেখে বিজেপি, সিপিএম হেসেছিল। ভেবেছিল তৃণমূলের মিটিংই শেষ হয়ে গেল!” এরপর যোগ করেন, “ইডি, সিবিআই বিজেপির মেরুদণ্ড। ওসব দেখিয়ে আমাদের ভয় পাওয়ানো যাবে না।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, “দেউচা পাঁচামি, তাজপুর বন্দর, নতুন সিলিকন ভ্যালি— বাংলায় প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। আগামী ৫০ বছর রাজ্যের কয়লা নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না।” সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার মুড়ি, চিড়েতেও জিএসটি ধার্য করেছে। ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে মমতা মুড়ি হাতে তার প্রতিবাদ করেন। বিজেপি নেতা-নেত্রীদের কাছে মমতার প্রশ্ন, বিজেপির নেতারা মুড়ি খাবেন না কি? মমতা অভিযোগ করেন, রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও জিএসটি দিতে হচ্ছে। মমতা বলেন, “আমার প্রশ্ন, মারা যেতে কত জিএসটি দিতে হবে!”
পাশাপাশি মমতা হুঁশিয়ারি দেন, “একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না। গরিব মানুষ গত সাত মাস ধরে কাজ করে টাকা পাচ্ছেন না। আরও কত টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। কেন আমার হকের টাকা বন্ধ করে দিলেন? ভোটে হেরেছেন বলে ভাতে মারার চেষ্টা করবেন? ১০০ দিনের কাজের টাকা যদি না দেয় বিজেপি সরকার, দিল্লী গিয়ে আপনাকে ঘেরাও করব।” জনগণকে সতর্ক করে মমতা জানান, “তৃণমূলের নামে কেউ টাকা তুললে সোজা থানায় গিয়ে জানান। তৃণমূল শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। আমি চাই, বিধায়করা রিকশা নিয়ে ঘুরবেন, কর্মীরা সাইকেল নিয়ে গ্রামে গ্রামে জনসংযোগ করবেন।” মমতা বলেন, “আমি চাই, ভারতে একটা আদর্শ রাজনৈতিক দল থাকুক, তার নাম তৃণমূল।” স্লোগান দেন, “চব্বিশে বিজেপির কারাগার ভাঙো, চব্বিশে মানুষের সরকার আনো।”