বিতর্কের কেন্দ্রে বিজেপিশাসিত ‘ডবল-ইঞ্জিন’ রাজ্য মধ্যপ্রদেশ। চম্বলের কুখ্যাত ডাকাত মালখান সিংয়ের স্ত্রী ললিতা রাজপুত মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার অন্তর্গত সুঙ্গায়ীর গ্রামপঞ্চায়েত থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত নির্বাচন জিতে সরপঞ্চ হয়েছেন। ডাকাতপত্নীর জয়েই ওই গ্রাম পেতে চলছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মোটা অঙ্কের টাকা। গুনা জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার এবং ভোপাল থেকে ১৬০ কিলোমিটার উত্তরে, হারুনের সিঙ্গাই পঞ্চায়েতে সরপঞ্চ পদের জন্য ললিতা তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। মধ্যপ্রদেশে পঞ্চায়েত নির্বাচন ২৫শে জুন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ললিতা গ্রামবাসীদের সমর্থনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সরপঞ্চ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এক সময়ের দাপুটে ডাকাত মালখান সিং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ললিতা রাজপুতকে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করার জন্য গ্রামবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। “আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায় ভাল রাস্তা, ব্রিজ, হ্যান্ড পাম্প ও জলের ব্যবস্থা করা হবে। যা যা গ্রামের উন্নয়ন দরকার ও (স্ত্রী) সব করবে। এখানে কোনও দুর্নীতি হবে না”, জানিয়েছেন মালখান।
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং বলেছিলেন, কোনও মহিলা যদি গ্রামে সরপঞ্চ ও ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেতে তবে তাঁদের গ্রামকে সরকার ১৫ লাখ টাকা দেব। সেই কথাও রাখা হবে বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডাকাত পত্নী ললতা সরপঞ্চ হয়ে বলেছেন, “আমি আমার গ্রামের উন্নয়ন করতে চাই। এখানে কোন আলো, রাস্তা বা পয়ঃনিষ্কাশন নেই, তাই আমি আমার গ্রামের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। যেহেতু গ্রামবাসী আমাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেছে, তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা আমার দায়িত্ব। সিংগাই গ্রাম পঞ্চায়েতের সকলেই মহিলা৷ এটি আমাকে সরপঞ্চ পদে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল। নারী শক্তি খুবই শক্তিশালী।” উল্লেখ্য, মালখান সিং, যিনি ৭০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ৮০-এর দশকের শুরুতে, চম্বলের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ডাকাতদের একজন ছিলেন। তাকে ধরে দেওয়ার জন্য মাথার দামও ঘোষণা করেছিল সরকার। তাকে ধরার জন্য ৭০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল। চম্বলে ১৩ বছরের রাজত্বকালে তিনি ভারতের দস্যু রাজা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি গোঁফের জন্যও পরিচিত। ভিন্দের বাসিন্দা, মালখান সিং বর্তমানে গুনা জেলার সুঙ্গায়িতে থাকেন। তিনি এবং তার দল ১৯৮২ সালে তৎকালীন সাংসদ মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিংয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। সেই সময়ে তার বিরুদ্ধে ১৮টি ডাকাতি, ২৮টি অপহরণ, ১৯টি খুনের চেষ্টা এবং ১৭টি খুনের সহ ৯৪টি মামলা ছিল। স্বাভাবিকভাবেই উক্ত ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শুরু হয়েছে তোলপাড়। নিন্দায় সরব হয়েছেন অনেকেই।