ফের প্রবল নিন্দার মুখে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মোদী তথা বিজেপির সমালোচনায় সরব হয়েছে আরব মুলুক। মোদীর নামে, নবী বিরোধী মন্তব্যের জেরেই কার্যত নাজেহাল গেরুয়াশিবির। কাতার থেকে কুয়েত, বাহরিন থেকে ইরান; সকলেই বিজেপি মুখপাত্রদের নবী বিরোধী বিতর্কিত বক্তব্যের প্রতিবাদে কড়া বিবৃতি জারি করেছে। পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ভারতের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে নিজেদের অসন্তোষের কথাও জানিয়েছে। এমন নজিরবিহীন ঘটনায় লজ্জার মুখে মোদী সরকার। যদিও ৬ই জুন ভারত কেবল নির্দিষ্ট করে পাকিস্তান এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক অর্গানাইজেশনের সমালোচনার জবাব দিয়েছে। বাকিদের সমালোচনার মুখে কুলুপ দিয়েছে কেন্দ্র। তবে কি বাকিদের জবাব দেওয়ার ক্ষমতা নেই মোদী সরকারের? প্রশ্ন থাকছেই। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, দুটি দেশই ভারতের বন্ধু দেশ। তেল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য রাষ্ট্রসঙ্ঘে বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের পাশে থাকা ইত্যাদি ক্ষেত্রে নয়াদিল্লীর দুই দেশেরই কূটনৈতিক সম্পর্ক মধুর। ভারতের সঙ্গে, চতুর্থ সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক লেনদেনকারী দেশ সৌদি আরব। পাকিস্তান, চীনের চাপ উপেক্ষা করেও সৌদি আরব বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের পাশে থেকেছে। এবার সেই সৌদি আরবই বেজায় চটেছে বিজেপির উপর। এই নিয়েই বিপাকে পদ্মশিবির।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রতি পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর বিরূপ মনোভাব দেশের বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে। অর্থনীতিতেও নামতে পারে ধস। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সাতটি উপসাগরীয় রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারত ২ হাজার কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য করেছে, যা ভারতের মোট আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ১৯ শতাংশ। বস্তুত বিজেপির এই মুসলমান বিদ্বেষী রাজনীতি নিয়ে দেশেই ক্ষোভের পাহাড় জমেছে। দেশের কর্পোরেট ও বাণিজ্য মহল মোদী সরকারকে ইতিমধ্যেই হুমকির সুরে জানিয়ে দিয়েছে, যেভাবেই হোক মুসলমান বিদ্বেষী প্রবণতা কমাতে হবে। তেল বিক্রি অথবা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে, সৌদি আরব নিষেধাজ্ঞা জারি করলে, পেট্রল ডিজেলের দাম যে পর্যায়ে পৌঁছাবে তাতে ভারতের অর্থনীতি ক্ষতির মুখে গিয়ে পড়বে। পাকিস্তানকে কড়া জবাবে ভারতের বিদেশ সচিব অরিন্দম বাগচী বলেন, “হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান এবং আহমদিয়াদের উপর পাকিস্তানে যে লাগাতার অত্যাচার হয়, তা সাক্ষী পৃথিবী। তাই ওদের মুখে এসব কথা মানায় না। ভারত সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।” ওআইসির সমালোচনাকেও নস্যাৎ করে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সৌদি আরব বা কাতার ইস্যুতে তিনি কুলুপ এঁটেছেন মুখে। তবে কি ভয় পেয়েছে মোদী সরকার? বিজেপির ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে হিন্দুত্বের তাস ব্যবহার করাই ডেকে আনছে বিপদ? তেমনটাই মন করছে বিশেষজ্ঞ মহল।