একুশের ভোটযুদ্ধে বিজেপিকে রুখে দিয়ে বাংলায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর তারপরেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শুরু হয়েছে অন্যান্য রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করে দলকে সর্বভারতীয় স্তরে মেলে ধরার চেষ্টা। আর সেই লক্ষ্যেই এই মুহূর্তে তৃণমূলের পাখির চোখ ত্রিপুরা। এবার ত্রিপুরায় নয়া দলীয় কার্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। চলতি মাসেই দলীয় কার্যালয় চালু হয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর।
দলের স্টিয়ারিং কমিটির নেতাদের সাথে বৈঠকে পূর্বেই দলীয় কার্যালয় নিয়ে জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছিলেন, একাধিক জায়গায় অফিস দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই চূড়ান্ত হয়ে যাবে। দলীয় সূত্রে খবর, বাড়ি পছন্দ হয়ে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। শীঘ্রই সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। এর আগে একাধিক বার বাড়ি পছন্দ হলেও, তৃণমূলকে কোনও ঘর বা বাড়ি দেওয়া যাবে না বলে ভয় দেখানো হয়েছিল বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে দলের বহর। সংখ্যায় প্রায় প্রতিদিন বাড়ছে দলীয় কর্মী। এছাড়া প্রায় প্রতিদিন কলকাতা থেকে ত্রিপুরা গিয়ে থাকছেন একের পর এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার সফর করে ফেলেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় প্রতি সপ্তাহে যাচ্ছেন সুস্মিতা দেব। ফলে সংগঠন গড়ে তুলতে প্রয়োজন একটি বাড়ি বা দলীয় কার্যালয়। সেটি চিন্তা করেই এই দলীয় কার্যালয় দ্রুত তৈরি করা হবে বলে সূত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই এই প্রস্তাব দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জমা পড়েছে। আগরতলা শহরের এক পাঁচ তলা হোটেলে গিয়ে উঠতেন তৃণমূল নেতারা। এছাড়া বেশ কয়েকটি হোটেলেও পালা করে থাকা শুরু করেছিলেন তারা। যদিও তৃণমূল অভিযোগ করেছে তাদের হোটেলে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি ব্যক্তিগত আলাপ আলোচনাতেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে হেনস্থার শিকার হতে হয় সায়নী ঘোষ, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তাই চেষ্টা করা হচ্ছে দলীয় কার্যালয় গঠনের।বনমালীপুরে তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের বাড়িতে একটা অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রায় প্রতিদিন যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। আবার ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে জেলার একাধিক অফিসে কর্মী যোগ দিচ্ছে সেখানের কোনও একটা বাড়িতে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও কার্যালয় না থাকলে অসুবিধা। তাই চেষ্টা করা হচ্ছে সেটি গঠন করার।
অন্যদিকে, এখন থেকেই সংগঠন ঢেলে সাজাতে কাজ শুরু করছেন শীর্ষ নেতারা। তাঁরা জেলা ধরে ধরে বৈঠক করবেন। প্রচার থেকে শুরু করে মানুষের কাছে কোন কোন ইস্যুতে পৌছতে হবে তার রুপরেখা তৈরি করবেন নেতারা। সূত্রের খবর, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় চলতি মাসেই আসতে পারেন ত্রিপুরায়। তখন নয়া কার্যালয় উদ্বোধন হবে।
এদিকে, আসন্ন ত্রিপুরার ৪ কেন্দ্রের উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ঘাস ফুলের হয়ে প্রার্থী হতে পারেন ত্রিপুরা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী পান্না দেব। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হেভিওয়েট সুদীপ রায় বর্মন। বড়দোয়ালি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী সংহিতা ব্যানার্জি।আগরতলা পৌর নিগম নির্বাচনে ৪০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।