চীনা আগ্রাসন নিয়ে মোদী সরকারের নির্দিষ্ট কোনও নীতি নেই। চীনকে ভয় পেয়ে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপোস করছে তারা। বারবারই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে আসছেন রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। এবার দেখা গেল মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াতে ফের সীমান্তের কাছে সক্রিয় চীনের বাহিনী। এমনই ইঙ্গিত মিলেছে উপগ্রহ চিত্রে।
এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্যাংগং লেকের কাছে ফের একটি সেতু তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। তবে আগেরটির চেয়ে এটি আরও বৃহৎ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেনা ট্যাঙ্কার বা সাজোঁয়া গাড়ি পারাপারের জন্যেই সেতুটি তৈরি করা হচ্ছে।
প্যাংগং লেকটি স্থলবেষ্টিত। প্রায় ১৩৫ কিলোমিটারের লেকটির কিছুটা অংশ লাদাখে আর বাকিটা তিব্বতে। ২০২০ সালের মে মাস থেকে ভারত এবং চিনা সেনার সংঘর্ষের সাক্ষী এই অঞ্চল। সেখানে চিনের তরফে এই নতুন সেতু গড়ার খবর ছড়াতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যার আঁচে সরগরম রাজনৈতিক মহলও।
নয়া সেতু তৈরির ঘটনার কথা তুলে ধরে এ দিন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। তাঁর টুইট, ‘প্যাংগং লেকের উপর চীনের দ্বিতীয় সেতু তৈরি ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ অমার্জনীয় লঙ্ঘন! চীনের এমন গুরুতর উস্কানির মুখে মোদী সরকারের নম্র আত্মসমর্পণ অত্যন্ত আতঙ্কের। কার্যত এটি শেষ পেরেক। প্রধানমন্ত্রী এবং বাকি মন্ত্রীরা কি এ বার জাগবেন এবং কিছু বলবেন?’
ওই লেক সংলগ্ন এলাকার যে অংশটি তাদের দখলে সেখানে এর আগেও একটি সেতু তৈরি করেছে চীন। ২০২১ সালের শেষের দিকে তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। যা শেষ হয়েছে গত এপ্রিল মাস নাগাদ। উল্লেখ্য, প্রথম সেতুটির ঠিক পাশেই তৈরি হচ্ছে এই দ্বিতীয় সেতুটি। তবে দ্বিতীয়টি অনেক বেশি বড় এবং চওড়া। মনে করা হচ্ছে, বর্তমানে যে সেতুটি গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছে চীনা সেনা, সেটির জন্য ক্রেন বা অন্যান্য নির্মাণ সরঞ্জাম আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার হতে পারে প্রথমটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিরক্ষা দফতরের সূত্র জানান, মনে হয় বাহিনীর ভারী ভারী সাজোঁয়া গাড়ি ভারতের সীমান্তের কাছে আনার জন্যেই এই দ্বিতীয় সেতুটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। পাশাপাশি ভারতীয় সেনা যদি প্যাংগং লেকের দক্ষিণে কোনও অভিযান চালায় তা হলে তা তড়িঘড়ি প্রতিহত করতে একাধিক রাস্তাও থাকবে বেজিংয়ের কাছে। অর্থাৎ শুধু বাহিনীর সদস্যদের পাঠাতেই নয়, অস্ত্রভর্তি সাজোঁয়া মজুত করার পথ প্রশস্ত করতেই এতটা তৎপরতা চীনের।