ইফতার পার্টি সেরে ফেরার পথে আচমকাই দুষ্কৃতীদের হামলা। পরপর বোমা। বোমার আঘাতে এবং ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম হয়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন মৃতের বন্ধু এবং শিশুটি। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার দেবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের গহরাপোতা গ্রামে। মৃত এবং আহত দুই বন্ধু তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক। রাজনৈতিক কারণেই তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
মৃত ওই তৃণমূল সমর্থকের নাম তৈহিদ আলী শেখ। কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে বোমার আঘাতে গুরুতর জখম হয়ে ভরতি মৃতের বন্ধু মিনারুল হক। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বর্তমানে বাড়িতে রয়েছে বোমার আঘাতে জখম বছর আটেকের শিশু। তৈহিদ আলি শেখ এবং মিনারুল হকের বাড়ি গহরাপোতা গ্রামে। তাঁরা দুজনে বন্ধু। দুজনেই পেশায় ব্যবসায়ী। রোজার পর বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ইফতার পার্টি সেরে পাওনা টাকা আদায় করার জন্য মোটরবাইকে চেপে দু’জনে গিয়েছিলেন দেবগ্রামে। সেখানে কয়েক জায়গায় টাকা আদায় করার পর দেবগ্রাম স্টেশন বাজারের কাছে একটি দোকানে বসে দুজনে চা খান। এরপর রাত ৯টা নাগাদ তাঁরা মোটরবাইক চালিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। যাওয়ার পথে তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় এক দম্পতির। তাঁরা মোস্তাকিনকে সঙ্গে করে ইফতার পার্টি সেরে সাইকেল নিয়ে হেঁটে মেয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিলেন। তাঁদের ছেলেকে গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁরা তৈহিদ ও মিনারুলকে বলেন। দুই বন্ধু ওই শিশুকে মোটরবাইকে তাঁদের মাঝখানে বসিয়ে গ্রামের দিকে ফিরছিলেন।
গ্রামে ঢোকার ৫০০ মিটার আগে দুষ্কৃতীরা তাঁদের মোটরবাইক লক্ষ্য করে পরপর বোমা ছুঁড়তে থাকে। তিনজন মোটরবাইক থেকে ছিটকে পড়ে। বোমার আঘাত লাগার পরেও মিনারুল দৌড়ে এগিয়ে যান। কিন্তু পা ভাঙার কারণে অস্ত্রোপচার হওয়ায় তৈহিদ দৌড়তে পারেননি। দুষ্কৃতীরা তাকে রাস্তায় ফেলে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। সেই মুহূর্তে বোমার আওয়াজ শুনে গ্রামের লোকজন ছুটে আসে। দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দুই বন্ধুকে উদ্ধার করে তাঁরা কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গভীর রাতে মৃত্যু হয় তৈহিদ আলি শেখের।