গত মাসদুয়েক ব্যাপী চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তবে এই যুদ্ধ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে ভারত। যুদ্ধের পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয় বাণিজ্যের উন্নতি হতে পারে, এমনটাই মত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। একটি প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, আমদানি এবং রপ্তানি – উভয় ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে পারে ভারত। রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে পশ্চিমের দেশগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে চীন এবং রাশিয়ার প্রতি নির্ভরতা কমবে বিভিন্ন দেশের। সেই সুযোগেই রাশিয়া-চিনের বিকল্প হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পারে ভারত। এমনই মত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদের।
মনমোহন বলেছেন, “বিশ্বজুড়ে ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি। বেড়ে যাচ্ছে অশোধিত তেলের দামও। এই পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে সারা পৃথিবীতে।” ভারতের বাণিজ্য সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “যুদ্ধের ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে পারে ভারত।” কোভিডের কারণে প্রায় ধসে গিয়েছে দেশের অর্থনীতি। সেই অবস্থার উন্নতি ঘটতে পারে যুদ্ধের ফলে। একইসঙ্গে মনমোহন বলেছেন, “যুব সমাজের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হতে পারে।” মনমোহন জানিয়েছেন, ভারতের উচিত বাণিজ্যের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। নিরপেক্ষ অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে যুদ্ধরত উভয় পক্ষের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তাঁর মত, “ভারতকে নিজের স্বার্থ অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে। নিরপেক্ষ বিদেশনীতির সুযোগ নিয়ে বাণিজ্যক্ষেত্রে সুদৃঢ় জায়গা করে নিতে হবে।”
পাশাপাশি, ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখা দরকার বলে মনে করেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “বাণিজ্যের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে গেলে দেশে শান্তির পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।” দেশে প্রায় দশ লক্ষ কারখানা তৈরি করার দরকার। সেখানে কাজ করার জন্য ন্যূনতম দশ কোটি মানুষের দরকার। যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় না থাকে, তা হলে এই বিপুল সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে মিলে মিশে কাজ করতে পারবে না। ফলে দেশের উন্নতিও থমকে থাকবে। তিনি এও জানিয়েছেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমি মর্মাহত।”