কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সোমবার বনধের নামে যারাজনজীবনে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাস ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হচ্ছে। এমনকী ক্ষতিপূরণও দিতে হবে ভাঙচুরকারীদেরই। এমনই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘটের প্রথম দিন, কার্যত কোনও সাড়াই পড়ল বঙ্গে। সকাল থেকে জোর করে বনধ সফল করার জন্য কয়েকটি জায়গায় বাম-কংগ্রেস নামলেও সাধারণ মানুষই তার প্রতিবাদ জানানোয় রণে ভঙ্গ দেয় বনধ সমর্থকরা। এরই মধ্যে গন্ডগোল ছড়াতে সকালে একাধিক বাসের উপর চড়াও হয় বনধ সমর্থকরা। প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে পাহাড় সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বনধের ইস্যুকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু বনধ চাই না। বনধের নামে গুণ্ডামি করা হয়েছে।” যারা বাস ভাঙচুর করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারি আইনে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, “লক্ষ লক্ষ টাকার আধুনিক বাস চলছে মানুষের জন্য। সেইসব সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। যারা করেছে, ক্ষতিপূরণ তাদেরই দিতে হবে।”
উল্লেখ্য, আর পাঁচটা দিনের মতোই এদিনও স্বাভাবিক ছন্দেই ছিল মহানগর। জেলাগুলিতেও কাজকর্ম হয়েছে অন্যান্য দিনের মতোই। সচল ছিল পরিবহণ। খোলা ছিল দোকানপাট। হাওড়া, শিয়ালদহে রেল চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বিমানবন্দরেও কোনও প্রভাব পড়েনি। স্কুল-কলেজ খোলা ছিল সর্বত্রই। কলকারখানাতেও পুরোদমে উৎপাদন হয়েছে। চা বাগানে শ্রমিকদের উপস্থিতিও ছিল যথেষ্ট। ব্যাংকের পরিষেবাতেও সমস্যা হয়নি। তবে বিক্ষিপ্তভাবে রেল অবরোধ, দোকানপাট, কারখানা বন্ধ করার চেষ্টা হলেও তা কিছুক্ষণের মধ্যেই সচল হয়ে যায়। তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বামেদের বনধ-সংস্কৃতিততে ইতি পড়েছে। এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না। বনধে গোলমাল পাকানোর জেরে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বনধের দ্বিতীয় দিনেও কড়া পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বনধ ব্যর্থ করার জন্য এদিন রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।