দু’বছর আগে লকডাউনের জেরে বাড়ি থেকে ৭০০ কিমি দূরে আটকে পড়া ছেলেকে আনতে একাই স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছিলেন। তাঁর এ হেন সাহসী কাজের জন্য খবরের শিরোনামেও এসেছিলেন রাজিয়া বেগম। কুড়িয়েছিলেন অনেক প্রশংসাও। ঘটনাচক্রে সেই ঘটনার প্রায় দু’বছর পর আবারও আটকে পড়েছে ছেলে। কিন্তু এবার আর পড়শি রাজ্য বা দেশের অন্য কোনও প্রান্তে নয়। সুদূর ইউরোপে কৃষ্ণসাগরের তীরের দেশ ইউক্রেনে। পার্থক্য এটাই যে এবার আর দু’চাকার বাহন নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে ভরসা করতে হচ্ছে ভারত সরকারের ওপর।
তেলেঙ্গানার নিজামাবাদের বাসিন্দা রাজিয়া। পেশায় সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা তিনি। ২০২০-তে করোনার জেরে যখন লকডাউন ঘোষণা হয় গোটা দেশে সে সময় তাঁর ছেলে মহম্মদ নিজামউদ্দিন বন্ধুকে ছাড়তে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকাকালীনই লকডাউন ঘোষণা হয়। যানবাহন, ট্রেন সব কিছুই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই নিজেই স্কুটি দিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ৭০০ কিমি পথ। দু’বছর পর যেন আবারও সেই দুঃস্বপ্ন ফিরে এল রাজিয়ার জীবনে। আবারও সেই মার্চ। কিন্তু এবার প্রেক্ষিতটা সম্পূর্ণ আলাদা।
ছেলে নিজামউদ্দিন ডাক্তারি পড়ার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন ইউক্রেনে। সেখানে রাশিয়ার সীমান্তলাগোয়া শহর সুমি স্টেট মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র নিজামউদ্দিন। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হতেই চরম দুর্ভাবনায় দিন কাটছে রাজিয়ার। কিভ, খারকিভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর থেকে ভারতীয়রা পড়শি দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়া এবং হাঙ্গেরিতে রওনা দিয়েছে। সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে ভারত সরকার। কিন্তু ছেলে নিজামউদ্দিন কীভাবে ফিরবেন, সেখানে কী অবস্থায় আছেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে রাজিয়ার। ছেলে একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।