সোমবার রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে রাশিয়া। আর তারপরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। অবশেষে সমস্ত আশঙ্কাকে সত্যি করে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে মস্কো। বৃহস্পতিবার সকালেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন যে রাশিয়ার তরফে ইউক্রেনে মিলিটারি অপারেশন চালানো হবে। আর তারপর থেকেই ইউক্রেনের মাটিতে গুলি-বোমা বর্ষণ চলছে। এর জেরে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় আটকে পড়েছেন সেই দেশে। যার মধ্যে অধিকাংশই পড়ুয়া। ভাল কলেজে পড়াশোনার আশাতেই তাঁরা বিদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে বেঁচে থাকা ও সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরে আসাই যে চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে, তা ভাবতেও পারেননি ইউক্রেনে পড়াশোনা করতে আসা ওই ছাত্রছাত্রীরা। বিগত এক মাস ধরেই সীমান্তে রুশ সেনার উপস্থিতির খবর মিললেও, শহরের ভিতরে তার আঁচ টের পাননি। যখন পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন দেরী হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। প্রথমে আকাশছোঁয়া টিকিটের দাম ও পরে এয়ারস্পেসই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইউক্রেনেই আটকে রয়েছেন প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া।
খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির এক পড়ুয়া জানান, পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা কলেজের কয়েকজন বন্ধু অস্থায়ী বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছি। কেন্দ্রের তরফে উদ্ধারকারী বিমান পাঠানোর কথা বললেও, এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তে পৌঁছনো অসম্ভব। এখান থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরে ওই সীমান্ত। আমরা বাড়ির সামনের সুপারমার্কেটেই যেতে পারছি না, ইউক্রেন সীমান্তে যাওয়া তো দূরের কথা। সারাদিন ধরেই বোমাবর্ষণের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। কোথায় যাব, কীভাবে যাব, সে সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি আমাদের। অন্য আরেক ভারতীয় পড়ুয়াও বলেন, ‘আমরা শুধু এইটুকুই জানি যে বাঙ্কারে থাকতে হবে আপাতত। কতদিন এভাবে আমরা টিকে থাকতে পারব, জানিনা। খাবার বলতে শুধু কলা ও বিস্কুট রয়েছে, সেটাই খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। প্রথম বিস্ফোরণের পরই ওয়াই-ফাইয়ের নেটওয়ার্ক উড়ে গিয়েছে। মোবাইলে যেটুকু ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে, তা ব্যবহার করেই বাড়ির লোকজনেদের সঙ্গে কথা বলছি।’ সকলেরই এক দাবি, রাস্তাঘাটে বেরনো যাচ্ছে না, ক্রমাগত গুলি-বোমা বর্ষণ হচ্ছে।