সামনেই পুরভোট। জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। প্রচারের ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল। তবে দুশ্চিন্তা কিছুতেই কমছে না গেরুয়াশিবিরের। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ থেকে দেওয়াল দখল, হুগলির রাজনীতিতে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে বিজেপি। উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়ার দেওয়ালে দেওয়ালে ফুটেছে ঘাসফুল। কিন্তু দেওয়ালেও দেখা নেই পদ্মফুলের। ঘাসফুলের পাশে কিছুটা হলেও দেখা যাচ্ছে কাস্তে-হাতুড়ি বা কোদাল-বেলচা। কিন্তু পদ্ম কোথাও ফোটেনি। সোমবার যখন জেলাজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস তো বটেই, বাম প্রার্থীরাও অন্তত মনোনয়নপত্র তোলার কাজ শেষ করে ফেলেছেন, তখন পদ্মশিবিরে তৎপরতা প্রায় নেই। দিনের শেষে গেরুয়াশিবির অবশ্য প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস আগেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছে। তারও আগে বামেরা। ফলে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের কর্মীমহলে হতাশা আর দীর্ঘশ্বাসের আওয়াজই প্রবল হচ্ছে। এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “দেওয়াল লেখার জন্য কর্মীদের উৎসাহ প্রয়োজন হয়। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার প্রয়োজন হয়। একটি জনবিচ্ছিন্ন দল বিজেপি। ফলে সেই দলে যে দেওয়াল লিখনের বা প্রচারের তৎপরতা থাকবে না, সেটাই স্বাভাবিক। আর ওদের তো অস্ত্র এখন একটাই– কুৎসা।”
আরএসপি’র জেলা সম্পাদক মৃন্ময় সেনগুপ্ত জানান, “আমাদের লেখার জন্য দেওয়াল পেতে সমস্যা হয়নি। আর ভোটের রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো থাকবেই। সেটা মেনে নিয়েই লড়তে হবে।” ভোট রাজনীতিতে প্রচার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। হুগলি জেলাজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস সেই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রটিকে শান দিয়ে চকচকে করে তুলেছে। জেলার ১২টি পুরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সিংহভাগ দেওয়াল শাসকদলের দখলে। দেওয়ালে দেওয়ালে যখন নানা রঙের মেলায় তৃণমূল প্রার্থীদের হয়ে ভোট চাওয়ার আবেদন জ্বলজ্বল করছে, তখন দেওয়াল দখলের ক্ষেত্রে কার্যত ময়দানেই নেই গেরুয়াশিবির। উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুরের মতো কিছু জায়গায় তাও বামেদের দেওয়াল লিখন চোখে পড়ছে। কিন্তু রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল? কোথাও নেই। চুঁচুড়া ও বাঁশবেড়িয়ায় দেওয়াল জুড়ে এখনও পর্যন্ত শুধুই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারের ছবি। বামেদের দেওয়াল দখল করা থাকলেও লেখা হয়ে ওঠেনি। রাজনৈতিক মহল বলছে, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপির পালে বাতাসের অভাব। কর্মীরা বিরাটভাবে আশাহত হয়েছে। তারই প্রতিক্রিয়া পুর নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে। প্রচারে ফিকে হচ্ছে গেরুয়া, দেওয়ালে এখনও ফোটেনি পদ্ম। স্বভাবতই চাপ বাড়ছে পদ্মশিবিরের।