চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে রেকর্ড পরিমাণ আয় করল রাজ্য সরকার। মোট ৭৬১ কোটি টাকা। গত তিনটি জানুয়ারি মাসের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ এবং যথেষ্ট বেশি। জানুয়ারি, ২০২১-এ স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে আয় হয়েছিল ৫৬৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে, সেই আয় ৪২৯ কোটি টাকা হয়েছিল ২০২০ সালে। অর্থাৎ সে-বছর জানুয়ারিতে এই খাতে আয় মোটেই আশানুরূপ হয়নি। তাই পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্ট্যাম্প ডিউটিতে ২ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেন। তার জন্যই রাজ্যের এই আয় বৃদ্ধি। এমনই মনে করছে নবান্নের শীর্ষমহল।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে রাজ্যের আয় হয় ৬২০ কোটি টাকা। ওই খাতে আয়ের পরিমাণ নভেম্বরে নানা কারণে কমে দাঁড়িয়েছিল ৪৮৩ কোটি টাকা। কিন্তু তার একমাস আগেই, অর্থাৎ অক্টোবরে আয় হয়েছিল রেকর্ড পরিমাণ। ১১১০ কোটি টাকা। একদিকে ছিল এই আয় বৃদ্ধির খুশির খবর, অন্যদিকে ছিল ক্রেডাই-সহ বিভিন্ন সংগঠনের দাবি। তাই স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে ২ শতাংশ ছাড়ের সিদ্ধান্ত আগামী ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে নবান্ন। গত বছর আয় হয়েছিল ৬ হাজার কোটি টাকা। রাজ্য সরকারের নয়া সিদ্ধান্তের সৌজন্যে এই খাতে এবারের আয়ের পরিমাণ সোমবারই তা ছাড়িয়ে গিয়েছে। ছাড়ের সময়সীমা শেষ হতে বাকি আরও পৌনে দু’মাস। এবারের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা পূরণ হওয়া সম্ভব। মনে করছেন অর্থদফতরের আধিকারিকরা।
এ বিষয়ে অর্থদফতর সূত্রের জানা গিয়েছে, রাজ্যে গ্রামাঞ্চলে স্ট্যাম্প ডিউটি ছিল ৫ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ছিল ৬ শতাংশ। সম্পত্তির দাম ১ কোটি টাকার বেশি হলে আরও ১ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। এই ছাড় প্রদানের ঘোষণাটি গত জুলাই মাসের। তার ফলে এখন গ্রামীণ এলাকায় ৩ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ৪ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়। উপকৃত হন জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে ওই মাসের শেষদিকে এই পদ্ধতি চালু হয়। ফ্ল্যাট ও জমির রেজিস্ট্রেশন-সহ নতুন নিয়মে পুরোদমে কেনাবেচা শুরু হয় আগস্ট থেকে। তার ফলে রাজ্যের উল্লেখযোগ্য আয় বেশ দ্রুত বেড়ে গিয়েছে। আয়ের পরিমাণ ছিল আগস্টে ৭৪৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে ৭৪২ কোটি টাকা, অক্টোবরে ১১১০ কোটি টাকা, নভেম্বরে ৪৮৩ কোটি টাকা এবং ডিসেম্বরে ৬২০ কোটি টাকা। গৃহ নির্মাণ সংস্থাগুলির সর্ববৃহৎ সমিতি কনফেডারেশন অব রিয়াল এস্টেট ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (ক্রেডাই) ছাড়ের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১শে মার্চ করার দাবি জানিয়েছিল। নবান্নও সেই দাবি মেনে নিতে দেরি করেনি। জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাট কেনাবেচার ক্ষেত্রে আরও অনেক সুবিধা পাবেন বাংলার মানুষ। এর ফলে সরকারের আয় আরও বাড়বে, এমনই আশা করছেন অফিসাররা।