রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে। তা নিয়ে, মুখ খুলেছেন একের পর এক নেতৃত্ব। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে টুইটারে ব্লক করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন বিধায়ক মদন মিত্র, সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েন। পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপিও। প্রত্যুত্তর করেছেন খোদ ধনখড়। এ বার, তা নিয়ে সুর চড়ালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
কুণালের কথায়, “রাজ্যপাল সংবিধানবিরোধী আচরণ করেছেন। যখন যেখানে পেরেছেন গিয়ে বদনাম করেছেন। ধনকড়ের বারংবার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এক্তিয়ার বহির্ভূত, কুৎসামূলক ও বিজেপির হয়ে ওকালতি করা পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকার কড়া প্রতিবাদ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সরানোর দাবিও করা হয়েছে।”
তৃণমূল নেতার আরও সংযোজন, “যাঁরা আজ বাংলার রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাতের কথা বলছেন, তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চাই, যখন, নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি তৎকালীন রাজ্যপাল শ্রীমতি কমলা বেনিওয়ালের সঙ্গে কী করেছিলেন? রাজ্যপাল বেনিওয়াল বনাম মোদীর সংঘাত ছিল শিরোনামে।
বিজেপি তখন বলচ বেনিওয়াল কংগ্রেসের পক্ষে কাজ করছে। শুধু তাই নয়, কমলাদেবীকে কার্যত অপসারণ করা হয়। তাই যে তৎকাল বিদেপি বা আড়কাঠিরা ইতিমধ্যে মন্তব্যের চেষ্টা করছেন, তাঁদের গুজরাটের ইতিহাস মনে করিয়ে দিলাম।”
উল্লেখ্য, এই হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজটি রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন সোমবার সকাল ১০ টা ২৫ মিনিটে। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ সোমবার নবান্ন থেকে তুলেছেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে, তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা বার্তা দিচ্ছে রাজ্যপালের এই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা। সেখানে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিচ্ছেন বলে দেখা যাচ্ছে। ফলে, বিরোধ থামছে না। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে আরও সংঘাত বাড়বে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘ভয় পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী এমন করেছেন।’ টুইট করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী অসাংবিধানিক পদক্ষেপ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পরেই টুইট করেন রাজ্যপাল। টুইটে লেখেন, “রাজ্যের বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয়ে রাজ্যপালকে জানানো মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।” কেন রাজ্য সরকার দু’ বছর ধরে কোনও তথ্য রাজ্যপালকে জানাচ্ছে না, তাও টুইটারে জানতে চান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
পরে যদিও আরও একটি টুইট করেন রাজ্যপাল। সেখানে তিনি বলেছেন, “সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে আলোচনা এবং সম্প্রীতিই গণতন্ত্রকে তুলে ধরে এবং সেই সঙ্গে সংবিধানের গুরুত্বকেও তুলে ধরে। এটি পারস্পরিক সম্মান এবং শ্রদ্ধার মাধ্যমে হবে।”