ফের বিতর্কের কেন্দ্রে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পুনরায় বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন তিনি। “বিশ্বভারতী এখন পশ্চিমবঙ্গ ভারতী, বোলপুর ভারতী হয়ে গিয়েছে…”, এমনই বললেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। প্রজাতন্ত্র দিবসের এক অনুষ্ঠানে উপাচার্যের ভাষণের ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যেই। যদিও সেই ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি ‘এখন খবর’। ওই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে উপাচার্য বিনয় ভবনের মাঠে একটি অনুষ্ঠানে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলছেন, “যাঁরা বিশ্বভারতীর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের কি দায়িত্ব নয়? যে আমরা যাব, আমরা গিয়ে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস গড়ব। যদি আমরা দায়িত্ব না নিই, তাহলে উত্তরাখণ্ড ক্যাম্পাস হয়ে যাবে কিন্তু। আজকে বিশ্বভারতী হয় হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ভারতী না হয় বোলপুর ভারতী হয়ে গিয়েছে। আমি থাকতে কিন্তু এটা উত্তরাখণ্ড ভারতী হতে দেব না। আমি এটাকে বিশ্বভারতীই রাখতে চাই। সেই জন্য আমাদের বেশ কিছু লোকজনকে কিন্তু ওখানে যেতে হবে। আমাদের ওখানে থাকতে হবে। তাতে বিশ্বভারতী বিশ্বভারতীই থাকবে।”
স্বাভাাবিকভাবেই এই ভিডিও ফুটেজ এখন নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। উপাচার্যের এহেন মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব আশ্রমিক থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীরাও। বিশ্বভারতীর একজন আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “এ সম্পর্কে আর কী বলার আছে। এখন তো ওঁ-ই সর্বময় কর্তা। ওঁ তো বিশ্বভারতীর সর্বময় কর্তা হয়ে বসে আছেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি প্রসঙ্গে ওঁ কী করেন, এখন সেটাই দেখার। তিনি যদি উন্নতি করতে পারবেন, তো দেখা যাক না। ওঁ আসলে কী বার্তা দিতে চাইছেন, জানি না।” উপাচার্য আরও বলেছেন, “বিশ্বভারতীর একাংশ কর্মী রয়েছেন, যাঁরা আসেন, যান, মাইনে পান। কিন্তু বিশ্বভারতী নিয়ে সচেতন নন।” এর আগেও একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছেন উপাচার্য। এপ্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “কী বলব ঠিক জানি না। ভাইস চ্যান্সেলরের মর্যাদা ঠিক কতটা রক্ষা হচ্ছে জানি না। আগে কারা কারা এই পদে ছিলেন, আর বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর যে সমস্ত কথা বার্তা বলছেন, তা তো ভাইস চ্যান্সেলরসুলভ নয়। মনে হয় তিনি যেন কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী। বা কোনও রাজনৈতিক দলের পদাধিকারী কথা বলছেন। ওঁর সময়ে বিশ্বভারতীর যদি কোনও উত্তরণ হয়ে থাকে, তাঁর কৃতিত্ব ওঁর। আর বিশ্বভারতীর যদি এ সময়ে কোনও সম্মানহানি কিংবা মর্যাদাহানি হয়, তারও দায় ও দায়িত্ব তিনি ফেরাতে পারেন না।” তৃণমূল নেতা তথা বিধায়কের প্রশ্ন, “উনি কি কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে কথা বলছেন কি? উনি কি বার্তা দিতে চাইছেন একজন উপাচার্য হয়ে?”