প্রথাগত পড়াশোনার পাশাপাশি সমানভাবে প্রয়োজন হাতেকলমে কাজের অভিজ্ঞতা। কেবল সরকারি নয়, যে কোনও চাকরির ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। ছাত্রজীবনে এই দু’টি দিকের গুরুত্ব বুঝতে ভুল করেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসেই ঘোষণা করেছিলেন সরকারি দফতরে কাজে ইন্টার্নশিপের। নতুন বছরের গোড়াতেই সেই প্রতিশ্রুতি পালন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক কাজকর্ম হাতে কলমে শিখতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকার চালু করল স্টুডেন্ট ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম। যে কোনও সরকারি দফতরে এক বছরের জন্য কাজ শেখার সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা। মাসিক ভাতা মিলবে পাঁচ হাজার টাকা। গেজেট বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে বলে উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। প্রতি বছর ছ’হাজার পড়ুয়াকে দেওয়া হবে সুযোগ। তার জন্য যোগ্যতমানও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, এই ইন্টার্নশিপের জন্য বেশ কিছু শর্তও রাখা হয়েছে। সুযোগ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) বাধ্যতামূলক। যদিও গেজেট নোটিফিকেশনে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, ক্লাস ব্যাহত হওয়ার কারণ দেখিয়ে কারও এনওসি আটকানো যাবে না। ইন্টার্নদের পড়াশোনা যাতে ব্যাহত না হয়, তার জন্য সবরকম সাহায্য করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। ইন্টার্নশিপের শেষে সার্টিফিকেট পাবেন সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীরা। মূল্যায়নের ভিত্তিতে নম্বর এবং গ্রেড থাকবে সেই শংসাপত্রে। আগামী দিনে যদি ওই ইন্টার্নদের মধ্যে কেউ সরকারি কাজে নিযুক্ত হন, সেক্ষেত্রে সার্টিফিকেটকে বাড়তি গুরুত্ব দেবে নবান্ন। ইন্টার্ন নির্বাচনের প্রক্রিয়াও হবে স্বচ্ছ। নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদনের করতে হবে। সেখান থেকে প্রয়োজন মতো মেধা এবং অন্যান্য বিষয়কে মাথায় রেখে পড়ুয়াদের বেছে নেবে দফতরগুলি। তবে সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রীর ঠিকানা বুঝে করা হবে নিয়োগ। এক বছর পর একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। সরকারি কর্মচারীদের মত ইন্টার্নশিপের সময়কালে এক দফতর থেকে আর এক দফতরে বদলিও করা হবে পড়ুয়াদের। এছাড়াও এক বছরে ১৫ দিন ছুটি নেওয়ার সুযোগ থাকবে তাঁদের। এছাড়াও প্রয়োজন মতো একটি দফতর ইন্টার্নের সংখ্যা বাড়াতে পারবে। তবে তার জন্য অর্থদফতরের অনুমতি লাগবে।