চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ভারতে করোনার টিকাকরণ শুরু হয়েছিল। যার এক বছর পূর্ণ হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কিন্তু ভারত কী আদৌ পারল করোনার টিকাকরণের লক্ষ্য পূরণ করতে? কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার অনেক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে টিকাদান পর্ব চালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতে এখনও পর্যন্ত টিকা পেয়েছেন ১৪৩ কোটি ১৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ৬৪১ জন। তবে এটা দেখে চমকে যাওয়ার কিছু নেই বলেই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই পরিসংখ্যানে মিশে আছে করোনা টিকার প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজের হিসেব।
তবে গুগলের পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত করোনা টিকার দুটি ডোজ পেয়েছেন ৪২.৫ শতাংশ। মোট জনসংখ্য়ার ৫৮.৬ কোটি মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। আর মাত্র একটি ডোজ নিয়েছেন ৬০.৭ শতাংশ মানুষ।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, দুটি ডোজ নিলেই করোনার মারন ক্ষমতা কমবে। সেক্ষেত্রে দুটি ডোজের হারই সবচেয়ে কম। এরমধ্যেই বয়স্ক ও কোমর্বিডিটি-যুক্ত ব্যক্তিদের তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরও টিকাকরণ শুরু হচ্ছে জানুয়ারির শুরু থেকে। এই পরিস্থিতিতে সার্বিক টিকাকরণের হার বাড়লেও সাধারণ মানুষের টিকার হার অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। কারণ পর্যাপ্ত টিকার যোগান কমতে পারে।
মোদি সরকার দাবি করেছিল, এক বছরের মধ্যেই ১০০ কোটি মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করবে। তাই বিশেষজ্ঞদের দাবি, মোদি সরকার যতই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচার করুক না কেন, আসলে টিকাকরণের হার মোটেই সন্তোষজনক নয়।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান (২৯ ডিসেম্বর, সকাল ৭টা) অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ৬৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৩২১ জন টিকা পেয়েছেন। যদিও প্রতিদিন এক কোটি ডোজ টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল মোদি সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিনেই উপলক্ষে ২ কোটি ৫০ লাখ ডোজ টিকা দিয়ে রেকর্ড গড়েছিল ভারত।
তখনই বলা হয়েছিল, প্রতিদিন এক কোটির বেশি টিকাকরণ চলবে ভারতে। কিন্তু সংখ্যাটা ক্রমেই নামতে নামতে ৬০-৬৫ লক্ষের আশেপাশে চলে এসেছে। সেটা সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে।
এই পরিস্থিতিতে ফের নতুন করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। আর নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করছে করোনার নয়া স্ট্রেইন ওমিক্রন। যা অতি দ্রুত সংক্রমক। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকমহল আরও টিকার ব্যবস্থা করতে বলছেন। কিন্তু সেটা হচ্ছে কই!
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টিকাকরণ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনার টিকা পেয়েছেন ১৯ কোটি ৭৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৮৬৬ জন। উত্তরপ্রদেশ ছাড়া ১০ কোটির বেশি টিকাকরণ হয়েছে শুধুমাত্র মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গে। এছাড়া বিহার, গুজরাট, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশে ৬-৯ কোটির মধ্যে টিকাকরণ হয়েছে।