নতুন বছর থেকে রাজ্যে অনলাইনেই মেটানো যাবে জমির খাজনা। এবার এমনই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এ জন্য ভূমি দফতরের নিজস্ব পোর্টাল বাংলার ভূমিতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সংযোগের কাজ শেষ হয়েছে। কয়েকটি ব্লকে পরীক্ষামূলকভাবে তা চালু করা হয়। আগামী মাসে তা গোটা রাজ্যে চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে নবান্ন। ভূমি দফতর সূত্রের খবর, বিভাগীয় ওয়েবসাইট কিংবা নির্দিষ্ট অ্যাপে গিয়ে জমির দাগ, খতিয়ান নন্বর দিলেই একটি ফর্ম বেরিয়ে আসবে। ফর্মটি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। জানা যাবে, বকেয়া-সহ খাজনার পরিমান কত। সেখানেই মিলবে একাধিক পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম। অনলাইনেই মিলবে খাজনার রশিদ।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার আগে দেশে জমিদারি আইন বলবৎ ছিল। ব্রিটিশ সরকারের অনুমতিক্রমে জমিদারেরা বার্ষিক খাজনার বিনিময়ে প্রজাদের জমি চাষ ও বসবাসের অনুমতি দিত। খাজনার একাংশ জমিদারদের জমা করতে হত সরকারের ঘরে। স্বাধীনতার পর জমিদারি প্রথার বিলোপ ঘটে দেশে। চালু আইন অনুযায়ী ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিরও প্রকৃত মালিক এখন রাষ্ট্র। জমির উপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হল খাজনা। ভারত সরকারের মালিকানাধীন বাদে সমস্ত জমির জন্যই সরকারকে খাজনা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড় ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকারগুলি।
ভূমি দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, খাজনা আদায় আগের সরকারে আমল থেকেই এ রাজ্যে খুবই অবহেলিত। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতে হয় বলে অনেকেই খাজনা জমা করেন না সময়ে। শিবির করে বকেয়া আদায় করতে গেলে দেখা যায় খাজনার পরিমাণ নিয়ে রায়ত অর্থাৎ জমির মালিকের প্রশ্ন তুলছেন। এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে খাজনা আদায় শুরু করা গেলে অনেকেই সময়ে তা মিটিয়ে দেবেন, বলেন ভূমি দফতরের এক অফিসার। নবান্ন সূত্রের খবর, নতুন করে কর না চাপিয়ে সরকারের আয় বৃদ্ধির রাস্তা খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় খাজনা বাবদ বছরে কম করে হাজার কোটি টাকা সরকারের ঘরে আসতে পারে। সেখানে বিগত আর্থিক বছরে আদায় হয়েছে মাত্র দু’শো কোটি টাকা।