এবার কেবল নবান্নেই নয়, সরকারি ব্যবস্থাপনাকে আম জনতার দরবারে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর মুখ্যমন্ত্রী। সেই লক্ষ্যেই সূচনা হয় ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের। নতুন বছরের গোড়াতেই সেই কর্মসূচীর তৃতীয় দফা। আগামী ২রা জানুয়ারি থেকে রাজ্যে শুরু হবে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। দু’দফায় তা চলবে ৩০শে জানুয়ারি পর্যন্ত। রাজ্যজুড়ে প্রায় ৮০ হাজার ক্যাম্পে সরকারি পরিষেবা সংক্রান্ত যাবতীয় আর্জি জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ, যাবতীয় সমস্যার সমাধান হবে একমাসের মধ্যে। অর্থাৎ ডেডলাইন ২৮শে ফেব্রুয়ারি। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রথম দফায় ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্প চলবে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত। পরবর্তী দফায় শিবিরের দিন ২০-৩০ জানুয়ারি। মাঝের ১০ দিন গঙ্গাসাগর মেলার কারণে বন্ধ রাখা হবে কাজ। শুধু তাই নয়, আগামী ২৩ ও ২৬শে জানুয়ারি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন এবং সাধারণতন্ত্র দিবসেও শিবিরে ছুটি থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, সব কাজ হোক স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সঙ্গে। মানুষকে সব ধরনের সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে হবে। তাই সমস্যা সমাধানের সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
‘দুয়ারে সরকার’-এর জন্য ২৩ জন সিনিয়র আইএএস অফিসারকে এক একটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জেলায় গিয়ে শিবির কেমন চলছে, তা খতিয়ে দেখবেন। গত বছর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য ভিড় উপচে পড়ায় কিছু জায়গায় গোলমাল হয়েছিল। সে কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত। শিবিরের আয়োজন নিয়ে সব জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, রাজ্য পুলিশের ডিজি, স্বরাষ্ট্রসচিব, এডিজি আইনশৃঙ্খলা, সব দপ্তরের প্রধান সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। তাঁর নির্দেশ, শিবিরে ঠিকমতো স্যানিটাইজেশন করতে হবে। ক্যাম্পে মাস্ক পড়াও বাধ্যতামূলক। এবারের এই প্রকল্পে ১৬টি দপ্তরের ২৪টি স্কিমের পরিষেবা মিলবে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রভৃতি ছাড়াও থাকছে নতুন ছ’টি স্কিম। সেগুলি হল, মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড, আর্টিজান ক্রেডিট কার্ড, উইভার ক্রেডিট কার্ড, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড (এআরডি), কিষাণ ক্রেডিট কার্ড (কৃষি) এবং সেল্ফ হেল্প গ্রুপ ক্রেডিট লিঙ্কেজ। ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মাধ্যমে দেড় কোটির বেশি মহিলা মাসের প্রথমে ৫০০ টাকা করে পাচ্ছেন। তফসিলি জাতি-উপজাতির মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে এক হাজার টাকা করে। সেই সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।