দেশজুড়ে এতদিন তাঁদের আন্দোলন ছিল পুরো অরাজনৈতিক। স্রেফ অধিকার রক্ষার্থে লড়াইয়ে নেমেছিলেন তাঁরা। যে যুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক দলকেই শরিক হতে দেননি কৃষকরা। সেই লড়াইয়ে সাফল্য এসেছে। কেন্দ্র তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে। এবার আন্দোলনকারী কৃষকরা নামছেন সক্রিয় রাজনীতিতে। তাঁদের মত, সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিততে হলে ভোটে জেতা দরকার। শনিবারের এক ছাতার তলায় এসে নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করে ফেলল পাঞ্জাবের ২২টি কৃষক সংগঠন। যার নাম ‘সংযুক্ত সমাজ মোর্চা’। এপ্রসঙ্গে কৃষক সংগঠনের নেতাদের দাবি, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা যেমন অনেকগুলি আলাদা আলাদা মতাদর্শের সংগঠনের ঐক্যমঞ্চ ছিল, তেমন এটাও একটা ঐক্যমঞ্চ। এটা কোনও রাজনৈতিক দল নয়, বরং এটা একটা মোর্চা, একটা আন্দোলনের নাম। যেখানে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ একত্রিত হবে। কৃষক নেতা হরমীত সিং কাদিয়ান বলছিলেন, “আমরা সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ব্যানারে আন্দোলন করে জয়ী হলাম। কিন্তু তারপর ঘরে ফিরে দেখলাম আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই যুদ্ধে জিততে হলে, আমাদের নির্বাচনেও জিততে হবে।”
সূত্র অনুযায়ী, এই সংযুক্ত সমাজ মোর্চার নেতৃত্বে থাকবেন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল। তাঁর বক্তব্য, জনগণের দাবি মেনেই এই রাজনৈতিক দল তৈরি করা। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ এই দলে যোগ দিয়েছেন। আপাতত তাঁর লক্ষ্য, দলের সংগঠন মজবুত করা এবং সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো। নবগঠিত সংযুক্ত সমাজ মোর্চা পাঞ্জাবের সব আসনেই লড়বে বলে দাবি করেছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সঙ্গে জোট করে লড়তে পারে এসএসএম। যদিও কৃষক নেতারা সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা পাঞ্চাবের ১১৭টি আসনেই লড়বেন। কৃষকদের এই পদক্ষেপ সেরাজ্যে কংগ্রেসের জন্য বড়সড় ধাক্কা। কারণ, এই কৃষক আন্দোলনের ফসল তুলেই পাঞ্জাবে ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। অথচ, কৃষকদের এই নতুন দল এবার লড়বে পাঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধেই। যদিও কৃষকদের এই নতুন দলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছে কৃষকদের বৃহত্তম সংগঠন সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। তারা এই নির্বাচনে লড়ছে না বলেই সাফ জানিয়েছেন কিষাণ মোর্চার নেতৃবৃন্দ।