এবার রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী অশোক হোটেল চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মোদী সরকার। ৬৫ বছরের পুরনো এই সরকারি সম্পত্তি সরকারকে কোনও লাভের মুখ দেখাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সূত্র। বরং সরকারি হিসেব অনুযায়ী হোটেলটিকে নতুন কার্পেট, নতুন আসবাব দিয়ে নতুন ভাবে সাজাতে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। তাই কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওই বিশাল খরচের বোঝা না সরকারের কাঁধে নিয়ে সেই ভার কোনও বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রকাশিত রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্র ৬০ বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিক ভাড়া দিতে চলেছে অশোক হোটেল। যেখানে মোটা টাকা লিজের পাশাপাশি বার্ষিক লভ্যাংশও দাবি করতে পারে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে শীঘ্রই মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন সরকারি সম্পত্তির বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। অশোক হোটেল নিয়ে সিদ্ধান্ত সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ২১ একর জমির উপর তৈরি এই হোটেলটিতে ৫০০টি ঘর রয়েছে। এ ছাড়া হোটেলের লাগোয়া ফাঁকা জমিও রয়েছে অনেকটা। যার মধ্যে ৮.১ একর জমি আলাদা করে লিজ দেওয়ার কথা ভেবেছে কেন্দ্র। এর মধ্যে ৬.৩ একর জমি দেওয়া হবে হোটেল চত্বরেই বিশেষ পরিষেবাযুক্ত অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির কাজে। বাকি ১.৮ একর অন্যান্য বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করার জন্য ভাড়া দেওয়া হবে। কেন্দ্র সূত্রে খবর এই জমিগুলি ৯০ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হবে। মেয়াদ ফুরোলে তা আবার সরকারের হাতেই ফেরত আসবে।
বিগত ১৯৫৬ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি সম্মেলনের জন্য তৈরি করা হয় অশোক হোটেল। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু হোটেলটি তৈরি করিয়েছিলেন জম্মু কাশ্মীরের তৎকালীন যুবরাজ কর্ণ সিংহের দান করা ২৫ একর জমির উপর। হোটেলটির আধুনিক ভারতীয় স্থাপত্যের নকশা করেছিলেন স্থপতি ই বি ডক্টর। ৬৫ বছর পর সেই ঐতিহ্যবাহী সম্পত্তির বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিলেও হোটেলের স্থাপত্যে যাতে কোনওরকম বদল না ঘটানো হয় সে দিকে খেয়াল রাখবে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে শর্তও আরোপ করা হবে চুক্তিপত্রে। সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, কোনও একটি সংস্থা বা একাধিক সংস্থা একসঙ্গে আবেদন করতে পারে। সর্বোচ্চ দাম দিতে আগ্রহীকেই বেছে নেওয়া হবে কেন্দ্রের তরফে। এর থেকে পাওয়া এককালীন অর্থের একটি বড় অংশ ঋণ মেটাতে এবং স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের জন্য কাজে লাগাতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার।